দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : করোনা থেকে বাঁচতে চাই সোশ্যাল ডিসটেন্সিং। বিশেষজ্ঞদের এই মত মেনেই চলছে বিশ্ব। একই পথে ভারতও। কিন্তু এর ঠিক উল্টো কথা বলছেন দেশের অন্যতম সেরা চিকিৎসা কেন্দ্র এইমসের একদল চিকিৎসক। তাঁদের দাবি, এখনই লকডাউনের বদলে স্কুল, কলেজে খুলে দেওয়া দরকার। সংক্রমণ হলেই নাকি তৈরি হবে ‘হার্ড ইমিউনিটি’। আর তাতেই হারানো যাবে করোনাভাইরাসকে।
এই গবেষকদের দাবি, সংক্রমণের মাধ্যমে ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলাই সেরা উপায়। এই গবেষকরা বলছেন, স্কুল, কলেজ খুলে দিলে সকলের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে আদতে লাভ হবে। একবার সংক্রমণ হলে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে। তাঁদের বক্তব্য, হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করা ছাড়া করোনা থেকে বাঁচার বিকল্প কোনও পথ নেই। এখন স্কুল, কলেজ যেমন অনলাইনে হচ্ছে তেমনই অফিসের কাজও অনেকেই বাড়ি থেকে করছেন। এই পদ্ধতি করোনাভাইরাসের ছোঁয়া থেকে দূরে রাখতে পারে কিন্তু রক্ষা করতে পারবে না। এর ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে বলেও দাবি করেছেন এই গবেষকরা।
এইমস-এর সেন্টার অব কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক সঞ্জয়কুমার রাইয়ের দাবি, ‛এটা আমরা কেউ জানি না কবে এই মারণ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে এবং তা আদৌ কাজ করবে কিনা সেটাও জানা নেই। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণই বিকল্প পথ। কারণ, হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করার দু’টিই উপায় রয়েছে। প্রথমটি ভ্যাকসিন আর দ্বিতীয়টি সংক্রমণের মাধ্যমে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা।’
পুণের ডিওয়াই পাতিল মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রধান চিকিৎসক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‛স্কুল, কলেজ খুলে দেওয়া হলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।’ তিনি আরও বলেন, শিশু এবং তরুণদের মধ্যে ‘ফ্রেশ ইমিউনিটি’ থাকে। যেটা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইতে খুবই কার্যকরী। আমেরিকার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‛আমরা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান দেখি তবে দেখব, ২৪টি জেলার কোথাও একটিও শিশুর মৃত্যু হয়নি।’ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও বক্তব্য, ‛ওবেসিটি কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে একটা বড় বিপদ। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সম্প্রতি এটা জানিয়েছে। জাপান একটি বারের জন্যও লকডাউন করেনি তবু সেখানে করোনায় মৃত্যুর হার খুবই কম।’
এই গবেষক দলের অপর দুই প্রতিনিধি সেন্টার অব কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন প্রধান চন্দ্রকান্ত এস পাণ্ডব এবং হিল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্বদীপ শ্রীবাস্তবের দাবিও এক।