Friday, May 3, 2024
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

বিজেপির একাধিক নব-নির্বাচিত বিধায়ক তৃণমূল মুখী, রাজ্যে নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে পারে গেরুয়া শিবির

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে প্রচারে এসে অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, বিজেপি ২০০-র বেশি আসন পাবে। এর কাছাকাছি তো গেরুয়া শিবির পৌঁছতেই পারেনি, ৭৭ টি আসন পেয়ে বিজেপির দৌড় শেষ হয়ে যায়। তারপর থেকেই হারের কারণ অনুসন্ধানে নেমে পড়ে বিজেপি নেতৃত্ব।

একেবারে বুথস্তর শুরু করে একাধিক নেতৃত্বের কাছে হারের বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এব্যাপারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট জমা পড়েছে। তা দেখেই কি আগামিদিনে বঙ্গ বিজেপিতে ব্যবস্থা? উঠছে প্রশ্ন।

অমিত শাহের কাছে ১২৮ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা পড়েছে। যেখানে একাধিক বিষয়কে বাংলায় বিজেপির কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দেওয়া একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে অমিত শাহের কাছে। জেপির হারের সব সম্ভাব্য কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

আর সেই রিপোর্ট উঠে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জয় শ্রী রাম স্লোগান সহ বিজেপির একাধিক নেতার বিলাসবহুল জীবনযাপন যথেষ্ট ভোটারদের কু-নজরে পড়েছে।

এছাড়াও একাধিক বিষয় সামনে এনেছেন গোয়েন্দারা। তবে আগামিদিনে বঙ্গ বিজেপিতে বড়সড় ধস নামতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। শাহের কাছে দেওয়া রিপোর্টে এমনটাই আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।

 

রিপোর্ট বলছে একাধিক বিজেপি বিধায়ক দলবদল করতে পারেন। নাম লেখাতে পারেন শাসকদল তৃণমূলে। ইতিমধ্যে শাসকদলের সঙ্গে তাদের একটা অংশ যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে বলে দাবি রিপোর্ট।

বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই একাধিক নেতা বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। এমনকি যারা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন তাদেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যাদের মধ্যে একাধিক প্রভাবশালী নেতাও রয়েছে। দলে এই মুহূর্তে তাঁদের অবস্থান কি তা নিয়ে খোদ রাজ্য বিজেপিতে প্রশ্ন উঠছে।

আর সেই তালিকাতে রয়েছেণ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতাও। ইতিমধ্যে তৃণমূলে ফিরতে চান বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন একাধিক বিজেপি নেতা। যার মধ্যে সোনালি গুহ, দিবেন্দ্যু বিশ্বাসের মতো নেতাও রয়েছেন। যদিও আজ বুধবার রাজভবণে এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, যারা ফিরতে চাইছেন তাঁদের ভোটে কোনও অবদান ছিল না।

অন্যদিকে, শাহের কাছে এই রিপোর্ট আসার পরেই কার্যত বিরোধী দল বিজেপি ভয় পেতে শুরু করছে ভাঙনের। শুধু দলবদলুরা নন, বিজেপির সদ্য নির্বাচিত বিধায়করাও বিজেপি ছেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাতে দলীয় নেতৃত্বও। যদিও শাসকদল তৃণমূল এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি

এখনই অন্য দল থেকে নেতাদের ঠাঁই দেওয়া হবে কি না। এই অবস্থায় বিজেপি চাইছে দলের নির্বাচিত বিধায়কদের ধরে রাখতে। সেইসঙ্গে দলের পদাধিকারীদের ধরে রাখতেও বদ্ধপরিকর বিজেপি। দলবদলু নেতারা এসেছেন, তাঁরা আবার ভোট মেটার পর ফিরে যাবেন, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই বিজেপির। বিজেপি চাইছেন বিধায়ক আর সংগঠনের নেতাদের ধরে রাখতে।

বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্ব যেমন তৃণমূল কংগ্রেস কী অবস্থান নেয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে, তেমন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপিতে বেসুরোদের খুঁজে বের করতে। কোন কোন বিধায়ক বেসুরো, কোন নেতারা বিজেপির ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠকে আসছেন না, বৈঠকে না আসার জন্য কী কারণ দর্শাচ্ছেন, তা জানতে কেন্দ্রীয় বিজেপি এক উপায় বের করেছে।

জানা যাচ্ছে, ভাঙন রুখতে অভিনব উদ্যোগে বিজেপি পরিকল্পনা করেছে প্রতিদিন রাতে দলীয় নেতৃত্ব ও এলাকার জন প্রতিনিধিদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকের। দলীয় নেতৃত্ব ভার্চুয়াল বৈঠকে পার্টির কর্মসূচি নিয়ে আলাপ আলোচনা করবেন প্রতিদিন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলবেন।

এর ফলে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হবে, সম্বন্বয় বাড়বে বলেই মনে করছেন দিলীপ-শুভেন্দুরা। কিন্তু এরপরেও দলে ভাঙন আটকানো যায় কিনা সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জের।

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!