দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় বিজেপির শোচনীয় পরাজয়ে জন্য শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই তির ছুঁড়লেন রাজ্য বিজেপি যুব শাখার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। একুশের নির্বাচনের আগে তিনিই শুভেন্দু অধিকারীর যোগদানে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সেই তিনিই এখন রাজ্যে দলের পরাজয়ের জন্য দায়ী করছেন শুভেন্দুকে।
শুভেন্দু অধিকার নন্দীগ্রাম থেকে বিতর্কিত জয়লাভের পর বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন। সেই বিরোধী দলনেতাকে দলের হারের জন্য দায়ী করে তাঁর পদ থেকে ইস্তফার পরামর্শ দিয়েছেন। বিজেপির বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সৌমিত্র খাঁ বিশ্বাস করেন বঙ্গ বিজেপির হারের অন্যতম কারণ শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর দলের মুখ করা হয়েছে। যাঁর জন্য বিপর্যয়, তাঁকে দলের মুখ করে সুফল লাভ হবে না। সৌমিত্রর এ ধরনের বিশ্বাসে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সৌমিত্র খাঁ বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনে ক্ষুব্ধ। দলের সিনিয়র নেতাদের বিষয়টি অবহিতও করেছেন সৌমিত্র।
সৌমিত্র খাঁ বিশ্বাস করেন শুভেন্দু অধিকারীর জন্যই জঙ্গলমহলে বিজেপির ফলাফল খারাপ হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমের মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়াতে বিজেপি ভালো ফল করেছিল। ২০১৯-এ জঙ্গলমহলে বিস্তারলাভ করতে সফল হয়েছিল বিজেপি, একুশের বিধানসভায় ভোট ধরে রাখতে পারেনি।
সৌমিত্র বিশ্বাস করেন যে, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পরে জঙ্গলমহলে সিপিএমের ভোট তৃণমূলে চলে গিয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল সিপিএমের ভোট। কিন্তু শুভেন্দু-ফ্যাক্টরে তা তৃণমূলের দিকে চলে যায়। তাঁর ব্যাখ্যা, “সিপিএম ভোটাররা গত দশ বছরে শুভেন্দুদার ক্রোধের শিকার হয়েছেন। তাই তাঁরা ২০১৯-এ বিজেপিকে সমর্থন করছিলেন। এবার শুভেন্দুদা বিজেপিতে আসায়, তাঁরা তৃণমূলের দিকে ঢলেছেন।
সৌমিত্র খাঁয়ের যুব শাখার সূত্রেই একাংশের দাবি, “শুভেন্দুদা বিরোধী দলনেতা হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় এই ভোটারদের চিরকাল বিচ্ছিন্ন করে দেবে দল থেকে। সৌমিত্রদা তাঁর দলের সিনিয়রদের একথা জানিয়েছেন ফলাও করে। গত সপ্তাহের বৈঠকের পর থেকে সৌমিত্র খাঁকে তার লোকসভা আসন বিষ্ণুপুরের দিকে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে এবং যুব শাখার ব্যাপারে কম জড়িত থাকতে বলা হয়েছে।
সোমবার সৌমিত্র খাঁ বিজেপি যুব মোর্চার নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচারের সময় বিজেপি যুব শাখাকে সেভাবে ব্যবহার না করায় সৌমিত্র তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। এর ফলে বাংলার যুবকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলেই অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন।