Thursday, March 13, 2025
Latest Newsআন্তর্জাতিকফিচার নিউজ

রাশিয়ার দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরির পেছনে রহস্য কী?

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : মহামারি করোনার হাত থেকে রেহাই পেতে ভ্যাকসিন আনতে চেষ্টা করছে চিন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের সব শক্তিশালী দেশগুলো। এর মধ্যে সবাইকে হারিয়ে করোনা মোকাবেলার ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু কিভাবে এমন অসম্ভবকে সম্ভব করল পুতিনের দেশ‌? কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন বাজারে আনল তাঁরা? সেই রহস্য উদঘাটন করল রাশিয়া।

রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী এইটাই পৃথিবীতে প্রথম কার্যকরী করোনা ভ্যাকসিন। খোদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উপযোগী এবং এর তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু পুতিনের সেই দাবি মানতে রাজি নয় বিশ্বের অনেক দেশেই। তাঁদের প্রধান অভিযোগ, রাশিয়ার এই করোনা ভ্যাকসিন এখনও মানব ট্রায়ালের সমস্ত ধাপ উত্তীর্ণ হয়নি। তাই এর কার্যকারিতা সংশয়াতীত নয়।

কিন্তু এত দ্রুত কিভাবে তৈরি করা গেল এই ভ্যাকসিন? রাশিয়া বলছে, ভ্যাকসিন তৈরিতে রুশ বিজ্ঞানিদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভ্যাকসিন। সেই সংক্রান্ত তথ্য দিতে এরই মধ্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে রুশ প্রশাসন। রুশ বিজ্ঞানীদের দাবি, যে পদ্ধতিতে ইবোলার ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছিল, সেই পথে হেঁটেই আবিষ্কার হয়েছে স্পুটনিক ফাইভ। ভ্যাকসিন তৈরিতে অ্যাডিনো ভাইরাসের ব্যাবহার করা হয়েছে। এই ভাইরাসের জিনের সঙ্গে অন্য ভাইরাসের প্রোটিন মিশিয়ে তৈরি হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত করোনা ভ্যাকসিন। অক্সফোর্ড, যুক্তরাষ্ট্র, চীনের বিভিন্ন সংস্থাও ভ্যাকসিন তৈরিতে অ্যাডিনো ভাইরাস ব্যবহার করেছে। কিন্তু উন্নতমানের প্রযুক্তি আছে শুধু রাশিয়ার কাছেই।

কিভাবে তৈরি হল ভ্যাকসিন? প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভ্যাকসিন তৈরিতে অ্যাডিনো ভাইরাসের ব্যাবহার করা হবে। সেই মতো অ্যাডিনো ভাইরাসের জিন নিয়ে পরিক্ষা নিরিক্ষা শুরু হয়। একই সঙ্গে অন্য ভাইরাসের প্রোটিন নিয়েও গবেষণা চলছিল। সেইমতো নতুন জিন ও প্রোটিনের মিশ্রণে তৈরি করোনার ভ্যাকসিন। রাশিয়ার দাবি, এই প্রক্রিয়ায় কয়েক মাসেই ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হয়েছে। রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনটির পৃষ্ঠপোষকতা করছে দেশটির সরাসরি বিনিয়োগ বিষয়ক সংস্থা আরডিআইএফ। সংস্থাটির নির্বাহী কিরিল দিমিত্রিভ সিএনবিসিকে বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে করোনা ভাইরাস এমইআরএসের খুব কাছাকাছি। আমরা এমইআরএসের ওপর একটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে রেখেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমইআরএসের ওপর দুই বছর ধরে গবেষণা করেছি। তারপর করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ওই ভ্যাক সিনটিকে কিছুটা পরিবর্তন করেছি। এটিই ছিল আসল গল্প, কোনও রাজনীতি নেই। আর ভ্যাকসিন গবেষণায় ক্ষেত্রে রাশিয়া সর্বদাই শীর্ষে ছিল। আরডিআইএফের প্রধান নির্বাহী কিরিল দিমিত্রিভ বলেন, বিশ্বের কাছে আমাদের ব্ক্তব্যটি হলো আমাদের কাছে এই প্রযুক্তি (ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তি) রয়েছে। আমরা যদি আপনার (বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা) নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করি তবে নভেম্বর/ডিসেম্বরে আপনার দেশে এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। এই ভ্যাকসিন নিয়ে যারা খুব সন্দেহবাদী তাঁরা এটা পাবেন না। তাদের ভ্যাকসিন উন্নতকরণে আমরা সৌভাগ্য কামনা করি।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!