দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: গত বছর করোনা নিয়ে মিথ্যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়েছিল গোদী মিডিয়া থেকে শুরু করে বিজেপি, আরএসএস ও উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। দেশজুড়ে করোনা ছড়াছড়ির জন্য পুরোপুরি তবলিঘি জামাতকে দায়ি করেছিল তারা। এমনকি সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করেছিল তারা। অনেকে তবলিঘি জামাতের সদস্যদের গুলি করে মারার নিদান দিয়েছিলেন। কেউ কেউ আবার গ্রেফতার করার কথা বলেছিলেন। নিজামউদ্দিন মার্কাজে সমাবেশ করার জন্য মামলাও দায়ের করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে। যদিও পরে নির্দোষ প্রমানিত হয় জামাতের সদস্যরা। তাদের নামে এতো মিথ্যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়েও রোখা যায়নি। এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন জেরবার দেশ, তখন সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন জামাতের সদস্যরাই। ধর্ম নির্বিশেষে করোনায় মৃতদের সৎকার করছেন তবলিঘি জামাতের সদস্যরা।
অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে তবলিঘি জামাতের সদস্য জি এম ডি গাউস জানান, ২০২০ সালে তিরুপতি মুসলিম অ্যাসোসিয়েশের সঙ্গে যৌথভাবে তাঁরা একটি কমিটি গঠন করে। করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি করোনায় মৃতদের সৎকারের কাজও করেন তাঁরা। গাউস জানান, অনেক সময় করোনায় মৃত্যু হলে দেহ সৎকারের জন্য সাহায্য পান না পরিবারের লোকজন। সেই সময় তবলিগি জামাতের স্বেচ্ছাসেবকরা তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষদের জন্য নয়, এই পরিষেবা সকলের জন্য, জানান তিনি।
করোনায় মৃতদের সৎকারের জন্য ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল গঠন করা হয়েছে। গাউসের কথায়, গত মাস থেকে এই দল প্রতিদিন ১৫টি দেহ সৎকার করে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ মূলত বয়স্ক মানুষদের প্রাণ কেড়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ আরও ভয়াবহ। বহু তরুণ প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এই ভাইরাস।’ মৃতের ধর্ম মেনে দেহ দাহ করার ব্যবস্থাও করছেন তাঁরা।
এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের সুরক্ষার দিকেও দেওয়া হচ্ছে বিশেষ নজর। গাউস জানান, এই স্বেচ্ছাসেবকদের প্রত্যেকেই পিপিই কিট পরে থাকেন। স্থানীয় পুলিশ, পুরসভাও তাঁদের সাহায্য করছে বলে দাবি তবলিগি জামাতের এই সদস্যের। গাউসের কথায়, গত বছর নিজামউদ্দিন মার্কাজে ঘটনায় তবলিগি জামাতে সদস্যরা সমালোচিত হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের এই উদ্যোগের পর সাধারণ মানুষ তাঁদের প্রশংসা করছেন।