দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে ভয়ংকর ৮০ জন অপরাধীর তালিকায় এবার বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডা. কাফিল খানের নাম জুড়ল যোগী সরকার। জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশ সরকার গোরক্ষপুর জেরায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এমন তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় ৮০ জনের মধ্যে নাম রয়েছে ডা. কাফিল খানের। এর ফলে এই ৮০ জনের উপর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সরসময় নজরদারি চালাবে।
এ ব্যাপারে ইংরেজি সাময়িকী ইন্ডিয়া টুড়ের ওয়েব পোর্টালে এক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হযেছে, গোরক্ষপুর পুলিশ প্রবীণ পুলিশ সুপার যোগেন্দ্র কুমারের নির্দেশে ৮১ জনের বিরুদ্ধে ‘ইতিহাস-নথি’ প্রকাশ করেছে। যদিও সব মিরিয়ে তারা ১,৫৪৩ জনের অপরাধ নথি তৈরি করেছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এ ব্যাপারে ডা. কাফিল খানের ভাই আদিল খান সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে যা বলেছেন তা তুলে ধরে ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, কাফিল খান বিষয়ে ২০২০ সালের ১৮ জুন এই ইতিহাস-নথি তৈরি করে উত্তরপ্রদেশ সরকার। আর তা শুক্রবার প্রকাশ করল।
ডা, কাফিল খান এ বিষয়ে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, তার ইতিহাস নথি উত্তরপ্রদেম সরকার প্রকাশ করেছে। তার বলেছে, তার জীবনের উপর তারা নজরদারি চালাবে। এটা ভাল জিনিস যে দুজন নিরাপত্তা রক্ষী ২৪ ঘণ্টা তার উপর নজর রাখবেন। এর ফলে, কমপক্ষে মিথ্যা মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারব।
কাফিল খান আরও বলেন, উত্তরপ্রদেশ অপরাধীদের উপর নজরদারি করেই ক্ষান্ত থাকবে না তারা নিরপরাধ ব্যক্তিদেরও ইতিহাস-নথি তৈরি করবে। উল্লেখ্য, ডা. কাফিল খান বিআরডি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মৃতপ্রায় শতাধিক শিশুকে নিজ উদ্যোগে অক্সিজেনের যোগান দিয়ে বাঁচিয়ে মিডিয়ার চোখে হিরো হয়ে ওঠেন। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবার ভগ্ন দশা সামনে আসায় সরকারের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন তিনি। তার চাকরির উপর সাসপেনশন জারি করার পরও তিন বছর ধরে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
গত বছর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সভায় ‘প্ররোচনামূলক’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে জানুয়ারিতে মুম্বই থেকে গোরক্ষপুর বিআরডি হাসপাতালের এই ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শহরের জনসাধারণের মধ্যে শন্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এবং আলীগড়ের নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি করতে পারে এই অভিযোগ তুলে ডা. কাফিল খানের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইন প্রয়োগ করা হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে ডা. কাফিল খান এখন রাজস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।