দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিমকোর্টের কোপে মমতা সরকার, আবাসন আইন বাতিল করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে একটি মামলার রায়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি আর শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য বিধানসভায় যে ভাবে আইন পাশ হয়েছে তাতে সংসদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তা সাংবিধানিক ব্যবস্থার পরিপন্থী। এ ব্যাপারে কেন্দ্র আইন পাশ করেছে। সেই আইন গোটা দেশে বলবৎ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও সেই আইনই মেনে চলতে হবে।
রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে ক্রেতাদের ঠকানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৭ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার সংসদে রেরা আইন তথা রিয়েল এস্টেট (রেগুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অ্যাক্ট পাশ করিয়েছিল। এখানে বলে রাখা ভাল যে এই আইনের ব্যাপারে মূল প্রস্তাব ছিল রাহুল গান্ধীর। ইউপিএ জমানায় গোটা দেশ জুড়ে এ ব্যাপারে অজয় মাকেনকে দিয়ে তিনি গোটা দেশে আলোচনা চালিয়েছিলেন। রিয়েল এস্টেট সংস্থার থেকে ফ্ল্যাট কিনে ঠকেছেন এমন ক্রেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন তিনি।
সে যাক। কেন্দ্র রেরা আইন পাশ করানোর পর সেই আইনের ধাঁচে বাংলায় হিরা আইন পাশ করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা এদিন বলেছেন, হিরা আইন যখন পাশ করানো হয়, ততদিনে রেরা আইন গোটা দেশে বলবৎ হয়ে গিয়েছে। এক দেশে দু’রকম আইন থাকতে পারে না। সেই কারণেই এই আইন খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হল, বাংলায় যে সব বেসরকারি রিয়েল এস্টেট বা হাউজিং প্রকল্প হিরা আইনে ইতিমধ্যে পাশ হয়েছে সেগুলির কী হবে?
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি তাঁদের রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে যে সব হাউজিং প্রকল্পকে হিরা আইনে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে সেগুলি গ্রাহ্য হবে। অর্থাৎ সেই ছাড়পত্র বহাল থাকবে। কিন্তু হিরা আইনে নতুন করে কোনও হাউজিং বা রিয়েল এস্টেট প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। রেরা আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করতে হবে।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দায়ের করা মামলার শুনানির পর বিচারপতিরা তাঁদের রায়ে এ কথা বলেছেন। তাঁদের কথায়, পশ্চিমবঙ্গের আইন কেন্দ্রের আইনে নতুন কোনও মাত্রা জোড়েনি। বা কেন্দ্রের আইনের পরিপূরক হয়ে ওঠেননি। তা কেন্দ্রের আইনকে হুবহু বহু জায়গায় টুকেছে। এমন আইন থাকার কোনও দরকার নেই। কেন্দ্রের আইনই বহাল থাকবে।