দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: মোদী সরকারের আনা বিতর্কিত নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল কেরল বিধানসভায়। কৃষকদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে এবং তাঁদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে আজ এক ঘন্টার জন্য বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকেছিল কেরলের সরকার। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আজ এই আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করেছেন, যা সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে।
অবিলম্বে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব পেশের সময় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে আক্রমণ করে বিজয়ন বলেন, এক আইকনিক কৃষক আন্দোলনের সাক্ষী থাকছে গোটা দেশ। তাঁর অভিযোগ, গত সেপ্টেম্বরে বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে সংসদে পাশ হওয়া এই আইনগুলো আদৌও “কৃষকদের স্বার্থে নয়”, বরং “কর্পোরেটদের সুবিধার” জন্য করা হয়েছে।তিনি বলেন, “এমন একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত যেখানে কেন্দ্রীয় সরকর কৃষকদের থেকে পণ্য সংগ্রহ করবে এবং ন্যায্য মূল্যে তা অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। কিন্তু তা না করে সরকার কর্পোরেশনগুলিকে কৃষিপণ্যের বাণিজ্য দখল করার রাস্তা খুলে দিয়েছে। কৃষকদের ন্যায্য দাম দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র তার দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসছে।”
“যদি এই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে তবে এটি কেরালাকে অত্যন্ত খারাপভাবে প্রভাবিত করবে। কেরলের মতো কনসিউমার রাজ্যে যদি কৃষিক্ষেত্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়, তবে রাজ্য ক্ষুধায় ডুবে যাবে,” তিনি বলেছিলেন।
তিনি বলেন, “কৃষিকাজ আমাদের দেশের সংস্কৃতির অংশ। কৃষকদের জীবনকে প্রভাবিত করছে এমন কিছু আইন নিয়ে তাদের মনে উদ্বেগ তৈরি হলে আইনসভাগুলির নৈতিক অধিকার আছে তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত নিতে।”
তাঁর কথায়, কেন্দ্র এমন সময় এই আইনটি পাশ করিয়েছে, যখন দেশের অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রের মতো কৃষি ক্ষেত্রও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। এই কারণেই কৃষকরা আরও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। তাঁদের মনে হয়েছে এখন যে এমএসপি তাঁরা পাচ্ছেন, এই আইনের কার্যকরের ফলে তা হারাবেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত ৩৫ দিন ধরে দিল্লির উপকন্ঠে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিল এবং এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টির দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ কৃষক। প্রবল শীত, দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন।