দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: শুভেন্দুর তৃণমূল ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে দলের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তার পরে পরেই আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক এবং দলের জেলা সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন জিতেন্দ্র৷ দলের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হওয়ার জেরে এবার জিতেন্দ্র তিওয়ারির ডানা ছাঁটতে চলেছে তৃণমূল৷ দলে থাকলেও জিতেন্দ্রকে ওই দুই পদে তাঁকে আরও ফেরানো হবে না বলেই দলীয় সূত্রে খবর৷
গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় জিতেন্দ্র তিওয়ারির৷ ১৩ ডিসেম্বর তাঁর লেখা একটি চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসে৷ যে চিঠিতে আসানসোলের অনুন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেন জিতেন্দ্র৷ এর পরেই প্রকাশ্যে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি৷ দলের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি৷ প্রথমে আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক এবং তার পর দলের জেলা সভাপতির পদও ছেড়ে দেনে তিনি৷ এমন কি, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় দিলেও গত ১৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন জিতেন্দ্র৷ এর পরই তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়৷ কিন্তু জিতেন্দ্রর যোগদান নিয়ে প্রকাশ্যেই আপত্তি জানান বাবুল সুপ্রিয়র মতো বিজেপি নেতারা৷
পদত্যাগের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য ভোল বদলে ফেলেন জিতেন্দ্র৷ কলকাতায় এসে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করার পরই তৃণমূলে থেকে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন তিনি৷ ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে বলেও দাবি করেন জিতেন্দ্র৷
তবে তৃণমূলে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেও এখনই জিতেন্দ্রকে আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ফেরাতে রাজি নয় দল৷ কারণ জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধেও যে আসানসোল এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাংশে দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে, তা তিনি পদত্যাগ করার পরই স্পষ্ট হয়ে যায়৷ ফলে এখনই জিতেন্দ্রকে সব পদ ফিরিয়ে দিলে দলের সেই অংশের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে৷ শুধু তাই নয়, এমন হলে দলের অন্যান্য বিক্ষুব্ধ নেতারাও দলকে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করতে পারেন৷
সূত্রের খবর, আসানসোল পুরসভায় এই মুহূর্তে প্রশাসক বোর্ডের যাঁরা সদস্য রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকেই প্রশাসক বোর্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে৷ জেলা সভাপতি হিসেবেও বেছে নেওয়া হতে পারে নতুন কাউকে৷ ফলে আপাতত জিতেন্দ্রকে কিছুটা চাপে রেখে পরীক্ষা করে নিতে চাইছে শাসক দলও৷