Saturday, December 21, 2024
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

ঈদের কেনাকেটায় ভিড় করবেন না! মুসলিমদের প্রতি আবেদন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকীর

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : করোনা আবহের মাঝেই চলছে মুসলমানদের পবিত্র মাস মাহে রমযান। এই মাসের তাৎপর্য মুসলমানদের কাছে অপরিসীম। এই মাসে মুসলমানরা শুধু সারা দিন উপোস করেই থেমে থাকেন না। তারাবির মতো বিশেষ নামাজ পড়ে থাকেন। আর এই নামাজ মসজিদে জামাত করে আদায় করতে হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকদের তরফ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার। আর সরকারের তরফ থেকেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তাই মুসলিম উলামাদের তরফ থেকে বারবার ঘোষণা করা হয়েছে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য। এরজন্য মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযেই পাঁচ থেকে ১০ জনের বেশি মুসল্লি থাকবেন না। তাছাড়া কি শহর, কি গ্ৰাম – সব জায়গার মসজিদেই জুম্মার নামায বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

রমযান মাস শেষ হলেই হবে খুশির ঈদ। এই ঈদ – উল – ফিতরে মুসলিম উম্মাহ খুশিতে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। নতুন কাপড় পরা থেকে শুরু করে সুস্বাদু খাবারের আয়োজন, সবই হয় ঈদের দিন। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে এবার ঈদের কেনাকাটা না করার জন্য রাজ্য তথা দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ফুরফুরা শরীফের মুখ্য নির্দেশক তথা অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। এক বার্তায় তিনি সকলের কাছে অনুরোধ করেছেন, ‛আপনারা ঈদের কেনাকাটা থেকে বিরত থাকুন। কত গরিব মানুষ পুরাতন জামাকাপড় পড়ে বছরের পর বছর ঈদের নামায পড়ে আসছেন। নতুন কাপড় কেনা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। চলুন না এক বছর আমরা সকলে তাদের সাথে শামিল হই। আর যদি কেনাকাটার টাকা বাঁচাতে পারেন তাহলে সেই টাকা প্রতিবেশী গরিবের হাতে তুলে দিন। দেখবেন এর চেয়ে খুশির আর কিছু হতে পারে না।’

পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, ‛আমার মনে হয় সরকার লকডাউন ঈদের আগে তুলে দিতে পারে। আর লকডাউন তুলে দিলে মানুষ হুড়মুড়িয়ে রাস্তায় নেবে যাবে। সেখানে থাকবেন হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ সকলেই। কিন্তু যেহেতু সামনে ঈদ, তাই কিছু ব্যবসায়ীদের অন্যায় আবদার মেটাতে সরকার হয়তো মুসলিম সম্প্রদায়ের সহানুভূতি পাবার কারণ দেখিয়ে লকডাউন তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারে। আর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন উঠলেই করোনা সংক্রমণ সুনামির মতো বেড়ে যাবে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে ময়দানে নেমে পড়বে কিছু সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি এবং গোদি মিডিয়া। এরা সারাসরি দায় চাপাবে মুসলিমদের উপর। যেমন দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলীগ জামাতের মারকাজ নিয়ে সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর দোষারোপ করা হয়েছে। তেমনি ঈদের কেনাকাটায় ভিড় হলে আর তার পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ বাড়লে শুধু বেছে বেছে মুসলিমদেরই দায়ী করবে ওই সমস্ত সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি এবং গোদি মিডিয়া।’

তাই মুসলিম সম্প্রদায়ের সকলের কাছে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী অনুরোধ করেন লকডাউন উঠে গেলেও আপনারা অন্তত ঈদ পর্যন্ত সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন। কোনও ভাবেই লকডাউন ভাঙবেন না। কাউকে দোষারোপ করার সুযোগ দেবেন না। ঈদ হল ওয়াজিব নামায‌। এই নামায ঘরে পড়া যায় না। ঈদের নামায পড়ার জন্য ঈদগাহ রয়েছে। তবে সামাজিক দুরত্বের কথা মাথায় রেখে আপনারা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। আর ঈদ কেটে যাওয়ার পর সরকার যা সিদ্ধান্ত নেয় সেই অনুযায়ী আপনারা কাজ করবেন। একই সঙ্গে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, লকডাউন মেনে চলা নিয়ে এখনও কিছু কিছু গোদি মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে এই বলে যে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় নাকি লকডাউন ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না। সেই সমস্ত মিডিয়াকে চ্যলেঞ্জ করে পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেন, লকডাউন পালনে মুসলিমরা যথেষ্ট আন্তরিক। তারা যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিচ্ছেন। এর জন্য তাদের প্রশংসা করা উচিত। তা না করে একটা দু’টো ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে গোটা সমাজটাকে বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

 

Support Free & Independent Journalism

Leave a Reply

error: Content is protected !!