দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এরপরেই ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির জয়জয়কার। এক ধাক্কায় ১৮টি আসন পায় বঙ্গ বিজেপি। অনেকেই বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের পিছনে ছিলেন মুকুল রায়ই। কার্যত তাঁর সাজানো ঘুঁটিতেও দিশেহারা অবস্থা হয় তৃণমূলের। কিন্তু সেই সময়ে পর্দার পিছনে তিনিই ছিলেন। এবারও তাই থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওপর তলার নির্দেশে লড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে নিজের কেন্দ্র ছাড়া তাঁকে প্রচারে দেখা যায়নি। এহেন অবস্থায় মুকুল রায়কে নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
আজ শুক্রবার বিধানসভায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। সেই মতো দুপুরেই শপথ নিতে বিধানসভায় পৌঁছন মুকুল রায়। কক্ষে ঢুকতেই মুকুল রায়কে দেখে এগিয়ে আসেন সুব্রত বক্সি। কথাও বলেন দুজনে। এরপর তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার। খুব অল্প কিছুক্ষণই বিধানসভায় ছিলেন মুকুল রায়। এরপর বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ধরে সাংবাদিকরা। একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে এদিনও সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি মুকুল রায়। তবে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য মুকুলের। তিনি শুধু জানিয়েছেন, যা বলার একদিন ডেকে বলবেন? কি বলবেন ডেকে মুকুল? তা নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। জেতার পর থেকে সেভাবে বিজেপি দফতর মুখী হননি মুকুল। তা নিয়ে জল্পনা ছিলই। আর সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিল মুকুলের মন্তব্য।
আজ শুক্রবার বিজেপির নব নির্বাচিত পরিষদীয় দলের বৈঠক ছিল। আর সেই বৈঠকে থাকবেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই বৈঠকে মুকুল রায় থাকছেন না। বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকে মুকুলের না থাকা নিয়েও চলছে জল্পনা। অনেকে বলছেন, মুকুল রায় কি এড়াতে চাইছেন বিজেপিকে?
মুকুল রায় বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে চাননি বলেই সূত্রের খবর। তিনি চেয়েছিলেন লোকসভা নির্বাচনের মতোই পিছন থেকে কাজ করে যেতে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁকে লড়াই করতে হয়েছিল। ফলে তাঁকে নিজের কেন্দ্র বাদ দিয়ে আর কোথাও প্রচারেও দেখা যায়নি। এবারের প্রচার ছিল কার্যত মুকুলহীন। নিজের ছেলের কেন্দ্র বীজপুরেও দেখা যায়নি তাঁকে। অন্যদিকে বিজেপিও লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এগিয়ে থাকা আসনের ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি। অথচ তাঁর কাঁধেই কিনা ছিল দলের সংগঠনকে মজবুত করার দায়িত্ব। ফলে কেন এই পরিস্থিতি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিজেপির অন্দরমহলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
নির্বাচনের ফল বেরনোর পরে বিজেপির প্রথম এবং বড় কর্মসূচি ছিল দেশ জুড়ে। ভোট পরবতী সন্ত্রাস নিয়ে কর্মসূচি ছিল বিজেপির। কলকাতায় সব থেকে বড় ধরনা কর্মসূচিটি হয় রাজ্য বিজেপির সদর দফতর মুরলিধর সেন লেনে। সেখানে ধরনা মঞ্চে হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তন বসু, জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো নেতারা। কিন্তু সেই মঞ্চে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। যা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।