সামাউল্লাহ মল্লিক : জীবনের ২৫টি মূল্যবান বসন্ত কেটে গিয়েছে। জীবন শেষ হতে বুঝি বাকি আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। জীবনের এতগুলো বছর খুশী, আনন্দ, দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়েই কেটে গেল। এই অল্পদৈর্ঘ্যের জীবনে সাংবাদিকতা করতে এসে শিখেছি অনেককিছু শুনেছি অনেক কষ্টদায়ক কথাও।
কিছুদিন আগে আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় বাড়ি এসেছিলেন। প্রথমেই প্রশ্ন করলেন, আমি কী করছি। উত্তর দেওয়ার সময় না দিয়েই বললেন, ‛বাইক রিপেয়ারিংয়ের ব্যবসাটা তো করলে না, চাকরি-বাকরিও তো ধরলে না, এখন কী করো?’ বললাম, ‛সাংবাদিকতা করি’। তিনি বললেন, ‛ও। তা ওইসব করে মার খাবার লাইনে যাচ্ছ কেন?’ বুঝলাম সাংবাদিকতা অর্থনৈতিক উন্নতির মাপযন্ত্রে চাকরি বা বাণিজ্য কোনোটির পর্যায়েই পড়ে না, অন্তত এক সময়ের সরকারি চাকুরে আমার সেই আত্মীয়ের কাছে।
ফেসবুকে আমার এক বিদেশী বন্ধু ছিলেন। তার সাথে যখন প্রথম পরিচয় তখন তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‛আমি কী করি’। বলেছিলাম, ‛সাংবাদিকতা’। তিনি উৎসাহিত হয়ে বলেছিলেন, ‛কোথায়’? বলেছিলাম অনলাইন মিডিয়ায়। তিনি বললেন, ‛এটা কী সিএনএনের মতো?’ বললাম, ‛হ্যাঁ’। বেচারা তো আমাকে পারে মাথায় করে রাখে। বলে, ‛তুমি এত ভালো জব করো। আমাদের দেশে সিএনএনের সবাই তো অনেক বেতন পায়, প্লেন ছাড়া ভ্রমণ করে না।’
আমি শুনে হাসব না কাঁদব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সত্যি স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, মূলত পেশা হিসাবে সাংবাদিকতায় এখনও দাঁড়াতে পারিনি। সত্যিকার সাংবাদিকতা যারা করেন, তাদের এ পেশাটাকে ধরে জীবন টেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন। তবে এই সাংবাদিকতা করার পিছনে টাকা কামানোর ভাবনা খুব কম সাংবাদিকেরই থাকে, কেননা সাংবাদিকরাই সমাজের কাণ্ডারি এবং সমাজ সংস্কারকের কাজ করতে পারেন। তাই তাদের মূল্য টাকা দিয়ে মেটানো যায়না।