দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলে সরকার গঠনের দাবি পেশ করল বিরোধী জোট। বুধবার নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র আধঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভলিনের কাছে সরকার গড়ার দাবি পেশ করলেন বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ। ফলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিদায় সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, নয়া সরকার গড়তে লাপিদের দল ‘ইয়েশ য়াতিদ’-কে সমর্থন দিয়েছেন ডানপন্থী দল ‘ইয়ামিনা পার্টি’র প্রধান নাফতালি বেনেট। তবে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এবং বেনজির বিষয় হচ্ছে যে জোট সরকারকে সমর্থন জানিয়েছে ইজরায়েলে সংখ্যালঘু আরবদের দল ‘ইউনাইটেড আরব লিস্ট’। এছাড়া এই জোটে থাকছে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানৎজের দল ‘ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি’। সব মিলিয়ে ইজরায়েলী সংসদ ‘নেসেট’-এ সংখ্যগরিষ্ঠতার দাবি পেশ করেছে বিরোধী ‘মহাজোট’। ফলে নজির গড়ে প্রায় ১২ বছর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী থাকার পর এবার কুরসি হারাতে চলেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। জানা গিয়েছে, নয়া সরকারে প্রধানমন্ত্রীর আসন ভাগ করে নেবেন বেনেট ও লাপিদ। প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন বেনেট তার প্রায় দু’বছর বাদে ওই পদে বসবেন লাপিদ। অর্থাৎ, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই জিতলেও দেশে রাজনৈতিক মঞ্চে পর্যুদস্ত হয়েছেন নেতানিয়াহু।
এদিকে, বিরোধী জোটের স্থায়িত্ব নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, বেনেটের ‘ইয়ামিনা পার্টি’ হচ্ছে ঘোর দক্ষিণপন্থী। অধিকৃত প্যালেস্তাইনে ইহুদি বসতি গড়ে তোলার পক্ষে বেনেট। কিন্তু বরাবর এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন লাপিদ। এছাড়া, আরব দলের রাজনৈতিক সমর্থন পেলেও রক্ষণশীল ইহুদি লবির চাপে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক বা জেরুজালেম নিয়েও নীতিতে বিশেষ কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না নয়া জোট সরকার। ফলে নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাড়া এই জোটের ‘ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচী’ বলতে তেমন কিছু নেই।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে চতুর্থবার নির্বাচনের পর একক দল হিসেবে সর্বাধিক আসন লাভ করে ‘লিকুদ পার্টি’। সেই মতো নেতানিয়াহুকে সরকার গড়ার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভলিন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হন তিনি। তারপর বিরোধী জোটকে সরকার গঠনে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় দেন প্রেসিডেন্ট। এহেন ডামাডোলে ইয়াইর লাপিদকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে নেতানিয়াহুর সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন বেনেট বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, ইজরায়েলের ১১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ বিশিষ্ট ইজরায়েলি পরিবারের সদস্য আইজ্যাক হার্জগ। মঙ্গলবার ইজরায়েলের ১২০ সদস্যের ‘নেসেট’ বা সংসদে অনুষ্ঠিত একটি গোপন ব্যালটে হার্জগ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। ৮০-র উপরে ভোট পেয়েছেন তিনি।