Sunday, September 8, 2024
সম্পাদকীয়

নারী জাতি শুধুই ভোগ্য-পণ্য? নারীকেও বুঝতে হবে নিজের মর্যাদা

ছবি : নিজস্ব

সামাউল্লাহ মল্লিক : এ আমার মহান দেশ ভারতবর্ষ। এই মহান দেশে নারী জাতিকে উচ্চ মর্যাদাবান বলে মনে করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযান চালানো হয় যেমন ‛বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ ইত্যাদি। কেন এই স্লোগান? কেননা নারী জাতি সুউচ্চ পর্যায়ের এবং আমাদের দেশে এই নারী জাতিকেই মায়ের রুপে পূজো করা হয়।

কিন্তু এইসব শুধু হয় লোক দেখানোর জন্য, মুখে বড়াই করার জন্য। এর আড়ালের ছবি কিন্তু উল্টো, যেখানে নারীকে শুধুমাত্র ভোগ্য-পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। চলতে ফিরতে রাস্তা ঘাটে তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে এমনকি পরিবারের লোকেরাও এই নারীদের মানষিক ভাবে ধর্ষণ করে দিনের পর দিন। তাহলে এরজন্য আমরা পুরুষরাই শুধু দায়ী? শুধু পুরুষকে দায়ী করেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকা কী আদৌ যাবে? আমার ব্যাক্তিগত মত, এক্ষেত্রে নারীরাও সমান দায়ে দায়ী, কোথাও টিভিতে এড করে কোথাও বা নগ্ন পোজ দিয়ে।

কিছু প্রশ্ন(?) আছে কী উত্তর(?)

১) যখন ভোডাফোনের একটা বিজ্ঞাপনে দু’পয়সায় মেয়ে পটানোর কথা বলা হয় তখন হাততালি বাজানোর অভিনয় কে করে?

২) প্রতিটা বিজ্ঞাপণে অর্ধনগ্ন নারী দেখিয়ে বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলি কীসের বার্তা দিতে চাইছে?

৩) প্যান্টি হোক বা প্যান্ট, কোলগেট বা পেপসুডেন্ট, সাবান বা ডিটারজেন্ট প্রতিটা বিজ্ঞাপনেই জিরো ফিগারের মহিলা দিয়ে অভিনয় করানোটা কী নারী সমাজকে ধর্ষণ করা নয়?

৪) সিনেমা চলার জন্য আইটেম গানের নামে মেয়েদের যেভাবে নাচানো হয়! অথবা অর্ধ নগ্ন করে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখানো হয়। এতে কী নারীকে অপমান করা হয়না?

৫) পত্রিকা হোক বা খবরের কাগজ, সব জায়গাতেই মেয়েদের উলঙ্গ ছবি! কেন? কী শেখানোর জন্য এগুলি ছাপানো হয়?

৬) দিনরাত টিভি হোক বা সিরিয়াল, ধর্ষণ, রোমান্টিক দৃশ্য পুরুষজাতিকে কী নারী ধর্ষণে উৎসাহ দিচ্ছেনা?

৭) সিনেমা অভিনেতা, ডাইরেক্টর এবং সেই সমস্ত দর্শক যারা এগুলি দেখে খুশী হয়ে হাততালি দেয় তারা কী ধর্ষক নয়?

৮) সংস্কৃতির সঙ্গে, মর্যাদার সঙ্গে, লজ্জার সঙ্গে এই ব্যাবহার কী অশ্লীলতার পর্যায়ে পড়েনা।

এতগুলি প্রশ্নের উত্তর হয়তো আপনিও খোঁজেন কিন্তু ভাবেননা তলিয়ে। ধারাবাহিকভাবে ঘটিত ধর্ষণের বিরুদ্ধে যারা গলা ফাটায় তাদের অবস্থা যেন এমন যে মাংস খায় অথচ রসুন, পিঁয়াজে নাক শিটকায়।

যে দেশে ‛আজা তেরি …. মারুঁ, তেরে সার সে …. কা ভূত উতারুঁ’-র মত গান হয়। আর এই ধরণের নাচে কোমর নাচানো সানি লিওনির যদি ফ্যান হয় যুবকেরা, সেই দেশে ধর্ষণ হবেনা তো কী হবে?

সব মিলিয়ে বলার তাৎপর্য এই যে, যতক্ষন না আমরা নারী জাতিকে নারীর মত দেখব এবং তাকে সম্মান দিতে শিখব ততক্ষন পর্যন্ত নারী বিকাশ, নারী স্বাধীনতার কথা বলা বেইমানীর মত শোনাবে।

Leave a Reply

error: Content is protected !!