দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ধসের ঘটনায় সোমবার আরও তিনজনের দেহ উদ্ধার হল বন্যা প্লাবিত তপোবন সুড়ঙ্গ থেকে। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫৩। চামোলি জেলা শাসক স্বাতি এস ভাদুরিয়া জানিয়েছেন যে সোমবার সকালে এনটিপিসির তপোবন–বিষ্ণুগড় প্রজেক্টের জায়গার অদিত সুড়ঙ্গ থেকে এই দেহ তিনটে উদ্ধার করা হয়। স্লিট ফ্লাশিং সুড়ঙ্গে (এসএফটি) এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।
জেলা শাসক জানিয়েছেন যে সুড়ঙ্গের ভেতর কাদা ও জল ভর্তি থাকার কারণে মাটি খননের যন্ত্রের সাহায্যে ক্যামেরা বা পাইপ প্রবেশ করানো সম্ভব নয়। তিনি জানিয়েছেন যে তপোবনের এসএফটিতে শনিবার রাতেই ড্রিলিং সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং এই আশা ছিল যে সুড়ঙ্গের ভেতর আটকে থাকাদের খুঁজে বের করতে ক্যামেরা প্রবেশ করানো সম্ভব হবে। কিন্তু জল–কাদার কারণে সেই সুবিধা পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ‘একমাত্র খননের মাধ্যমেই উদ্ধার বা দেহ উদ্ধার সম্ভবপর।’
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিধ্বংসী হিমবাহ ধসের পর সরকারিভাবে এখনও ১৫০ জন নিখোঁজ। সম্ভবত অলকানন্দা নদীর উচ্চতলে তুষারপাত হওয়ার জন্যই এই হিমবাহ ধস নামে। ধৌলিগঙ্গা ও ঋষিগঙ্গা নদীর জল দু’টি হাইডেল প্রকল্পের মধ্যে ঢুকে যায়। নিখোঁজ বা আটকে পড়াদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে জেলা শাসক বলেন, ‘পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে আমাদের সর্বদা আশাবাদী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’
তপোবনের এসএফটি সুড়ঙ্গে যখন কাজ চলছিল সেই সময় হড়কা বানের জন্য ৩০ জন কর্মী সেখানে আটকে থাকতে পারেন। মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেহ সনাক্ত ও তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্নের জন্য ডিএনএ নমুনা ও অন্যান্য বিষয়গুলির কাজ চলছে এবং মৃতদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। চামোলি জেলার বাইরে যে সব মৃতদের পরিবার রয়েছে তারা সংশ্লীষ্ট জেলা প্রশাসনের থেকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে। এক সপ্তাহ আগে হওয়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বাসিন্দাদের খাদ্যশস্য ও প্রয়োজনীয় জিনিস সহ ৫০০ বেশি রেশন কিট বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে এসেছে একমাত্র পাঙ্গে সোলার লন্ঠন বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে এই সময়ের জন্য। তপোবন উদ্ধারকাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ইন্দো–তিব্বত পুলিশ, জাতীয় বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী ও রাজ্য বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী।