দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ৩২ বছরের অটোরিকশা চালক প্রহ্লাদ। তার নিজের অটোরিকশায় এ ফোর সাইজের সাদাকাগজে প্রিন্ট করা পোস্টার সাঁটিয়ে রেখেছে ‘ফ্রি অটো সার্ভিস’, কেবলমাত্র রোজাদারদের জন্য। দক্ষিণ দিল্লির রাস্তায় অটো চালায় প্রহ্লাদ। তিনি উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। চার বছর ধরে অটো চালাচ্ছেন। দুই পুত্র ও এক কন্যা দিয়ে তার সংসার। রোজার মাসে হঠাৎ তার মনে এই ধরনের চিন্তার উদয় হল কেন? অটোচালক মহলে প্রহ্লাদ গুরু বা মুখিয়া নামেই পরিচিত।
সেই গুরু জানালেন , রোজার এই কয়দিন ১০ জন সওয়ারি পেয়েছি, যারা রোযা রেখেছিলেন। আমি অটো ভাড়ায় নিজের সংসার চালাই। জানি ভাড়া না নিলে আমার আর্থিক ক্ষতি হবে কিছুটা। কিন্তু আমি ভিনধর্মের মানুষ হয়েও এই কঠিন গরমের দিনে রোজাদারদের সামান্য একটু উপকার করে তাদের আশীর্বাদ পেতে আগ্রহী। আমি মনে করি রোজাদারদের কিছু উপকার করতে পারলে আমার বরং উপকারই হবে। আমার নিজের মেহনত থেকে সামান্য এইটুকু দান আমি করতে পারি।
প্রহ্লাদ জানান, রমযান মাস এলে আমি মনে মনে তৈরি হয়ে নিই এই উপকার করার জন্য। এ বছর পোস্টার লাগিয়েছি বোঝানোর জন্য যে আমি রোজাদারদের ভাড়া নিচ্ছি না। প্রহ্লাদের মতে, প্রতিটি ধর্মই এক। ঈশ্বরও এক। যদি কেউ কোনও বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় , তাহলে আমরা মিলিতভাবে তা বদলে দিতে পারি। আরও ভালো কাজ করাতে পারি। প্রহ্লাদের এই মানবিক ও সম্প্রীতির উদ্যোগ নাড়িয়ে দিয়েছে বহু বিবেকবান মানুষের হৃদয়।
প্রহ্লাদের অটোরিকশা পোস্টারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তার জন্য শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন অনেকেই। অনেকেই দিলওয়ালে দিল্লিওয়ালা বলে তাকে অভিহিত করেছেন। রোজাদারদের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য ভিনধর্মী এক অটোচালক নিজের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করছে। প্রকাশ্যে রোজাদারদের আহ্বান জানাচ্ছেন, তার অটোয় বিনা পয়সায় চাপতে। এই ঘটনা শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে ধর্ম নিয়ে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের জন্যও।