Friday, April 26, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

গরীব মৌলানার ঘর থেকে রাষ্ট্রপতি! ‘মিসাইল ম্যান’‌ কালামের আজ ৮৯তম জন্মদিন

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবরর তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে এক দরিদ্র পরিবারে ঘর আলো করে জন্ম হয়েছিল ডক্টর আবুল পকির জয়নল আবদিন আব্দুল কালামের। বাবা ছিলেন আবুল পকির জয়নল আবদিন রামেশ্বরমের একজন বিশিষ্ট মৌলানা। ছোট থেকেই কালামের বেড়ে ওঠা দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে। সেই কালাম পরবর্তীতে ‘মিসাইল ম্যান’‌ নামে খ্যাত হন। আজ বিশ্বের বিজ্ঞান-জয়যাত্রায় তাঁর নাম উচ্চারিত হয়। দেশের একমাত্র বৈজ্ঞানিক যিনি রাষ্ট্রপতির পদে অভিষিক্ত হন। আজ ৮৯ তম জন্মদিন।

ডক্টর এপিজে আব্দুল কালামের শুধু বিজ্ঞানী বললেই তাঁর জন্য ‘বিশেষণ’ থেকে থাকে না। তিনি ছিলেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, ছিলেন একজন মানব দরদী , সমাজ প্রেমী শিক্ষাবিদ। ভারত তাঁকে যেভাবে পেয়েছে, যেভাবে তাঁর অবদান পেয়েছে, তাতেই সমৃদ্ধ হয়েছে নানান দিক দিয়ে। এমন এক মহীরুহের জন্ম বার্ষিকীতে দেখে নেওয়া যাক দেশের প্রতি তাঁর আবদানের বিভিন্ন দিক।

একসময়ে খবরের কাগজ বিলি করেছেন রোজগারের তাগিদে। অল্প বয়েস থেকেই স্বপ্ন ছিল ফাইটার পাইলট হওয়ার। আটজন চালককে নির্বাচন করা হলেও কালামের নাম দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ছিল নয় নম্বরে। ফলে সেই স্বপ্ন অধরা থাকলেও, ভারতের মিসাইল ম্যান তিনি। পোখরানে ভারতের পরমাণু শক্তি পরীক্ষার ব্লু-প্রিন্ট তাঁরই মস্তিষ্কজাত।

৪০ টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট অর্জন করেন কালাম। ছাত্রমহলে তাঁর জনপ্রিয়তা অনের নামী শিক্ষকের কাছেও ঈর্ষণীয় ছিল। তাঁর অনুসন্ধিৎসু মনটিকে চিরসম্মান দিতে তার জন্মদিনকে বিশ্ব ছাত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ভারতীয় বিজ্ঞানের এই শ্রদ্ধেয় যুগ পুরুষ। ২০০২ সালে দেশের ১১ তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন তিনি। এরপর থেকেই দেশে একজন শিক্ষাবিদ হিসাবেও তিনি একাধিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

আবদুল কালামের হাত ধরে ভারতে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি পোখরানের নিউক্লিয়ার টেস্ট। পাকিস্তান যখন ক্রমাগত কাশ্মীরে রক্তচক্ষু দেখাতে শুরু করে, তখন ১৯৯৮ সালে কালামের নেতৃত্বে ভারত সফল নিউক্লিয়ার টেস্ট করে। ১৯৯২ সাল থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের ১৯৯৯ পর্যন্ত নিউক্লিয়ার গবেষণায় ভারতকে এক নতুন যুগের সামনে এনে দাঁড় করান কালাম।

ডিআরডিও এবং ইসরো দুটি তাবড় বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানে এককালে নেতৃত্ব দিয়েছেন কালাম। তাঁর আমলেই শুরু হয়েছে অগ্নি ও পৃথ্বী মিসাইলের অপারেশনের কাজ। আর এই কাজে তাঁর সাফল্যের জন্য কালামকে ‘মিসাইল ম্যান’ বলে সম্বোধন করেন অনেকেই।

ইসরোর ইন্ডিজেনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্যাল নিয়ে ১০ বছর ধরে কাজ করেন কালাম। তারপরই আসে ইসরোর হাতে কাঙ্খিত সাফল্য। ১৯৮০ এর জুলাইতে ভারত সাফল্যের সঙ্গে রোহিনী লঞ্চ করে। ভারতের ব্যালাস্টিক মিসাইল ঘিরেও বিশেষ প্রজেক্টের দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল কালাম। তাঁর নেতৃত্বে ‘ডেভিল’ এর কাজ সম্পন্ন হয়। যা ভারতের প্রতিরক্ষার এক অসামান্য অঙ্গ।

আব্দুল কালাম স্বাস্থ্য়ক্ষেত্রেও ব্য়াপক অবদান রেখেছেন। কম দামের করোনারি স্টেন্ট তিনি দেশকে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি কার্ডিওলজিস্ট সোমা রাজুর সঙ্গে একটি যৌথ উদ্যোগে কাজ করেন।

২০১৫ সালে শিলং আইআইএম-এর মঞ্চে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে দিতেই হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেহুঁশ হয়ে যান মিসাইল ম্যান। দু’কিলোমিটার দূরে বেথেনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!