দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মেয়েদের ছবি চুরি করে পর্ণ ভিডিও বানাচ্ছে অ্যাপ, এমনটাই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা সেনসিটি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বর্তমান প্রজন্মের জিয়নকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এরসাথে বেড়েছে নানা ধরণের সাইবার ক্রাইমের প্রবণতা! সম্প্রতি, প্রযুক্তির অপব্যবহারের এমনই একটি ঘৃণ্য ঘটনা সামনে এসেছে, যা শোনার পর ইউজাররা বিশেষত মেয়েরা তাদের ফটো শেয়ার করার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মেয়েদের ছবি চুরি করে, বিশেষ AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) টেকনোলজির সাহায্যে সেগুলিকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে নগ্ন ছবিতে।
ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত ছবি বা মুহূর্ত ফাঁস হয়েছে এমন খবর অহরহ শোনা যায়। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি, অনেকেই এই বিশ্রী অস্বস্তির শিকার হন।
কিন্তু কারো অজান্তেই তার সাধারণ ছবি অশ্লীল রূপে ছড়িয়ে গেলে, সমস্যার পারদ চরম সীমায় পৌঁছে যায়! সাম্প্রতিক সময়ে ঠিক এমনটাই ঘটানো হচ্ছে Deepfake নামের একটি টেকনোলজির সাহায্যে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে, কোনো মানুষের মুখ অন্য কোনো ফটো বা ভিডিওতে এমনভাবে সেট করা যায়, যা বাস্তবের মতই দেখতে লাগে।
জানা গিয়েছে, বিশেষ কারণে AI-এর সাহায্যে Deepfake নামের একটি প্রযুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে বেশি সময় লাগেনা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ বা কারা Deepfake টেকনোলজিকে ব্যবহার করেছে মেয়েদের ছবি মর্ফ করার জন্য। হাজার হাজার মেয়ের অজান্তেই, তাদের ছবি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে DeepNudes।
জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবি চুরি করে DeepNudes অ্যাপ এবং সফটওয়্যারের সহায়তায় এডিট করে সেগুলিকে নগ্ন রূপে পরবর্তিত করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা Sensity-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৮ বছর বা তার কম বয়সী মেয়েরাই এই ঘটনার শিকার হয়েছে, কিন্তু তারা এই ঘটনা সম্পর্কে অবগতই নয়। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, এক লক্ষেরও বেশি মেয়ের ছবি নগ্ন রূপে ভাইরাল হয়েছে। এই ছবিগুলির মধ্যে ৭০% ছবিই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে চুরি করা হয়েছে।
সেনসিটির মতে, ‘ডিপফেক বট’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে সেলিব্রিটিদের টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু এখন, সাধারণ পাবলিক অ্যাকাউন্টগুলির ছবি থেকেও ন্যুড তৈরি করা হচ্ছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই টেকনোলজির সাহায্যে যেকোনো সাধারণ ছবি আনড্রেস অর্থাত্ নগ্ন করা যায়। এর জন্য কেবলমাত্র টার্গেটের ফটো আপলোড করে, তারপর বট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যে ছবিটি প্রসেস করে সেটিকে ন্যুডে রূপান্তরিত করা যায়। সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার, এই বটটি টেলিগ্রামের প্রাইভেট মেসেজিং চ্যানেলে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে, ফলে এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিকৃত মানসিকতার কিছু মানুষ।