দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী কাল শনিবার শুরু হচ্ছে করোনার টিকাকরণ। সকাল সাড়ে ১০ টায় যার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদী। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন নেবেন , তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথাও বলবেন। কিন্তু তার ঠিক আগে কোভিড যােদ্ধা বা আপামর জনসাধারণের জন্য খুব স্বস্তিজনক বার্তা দিল না কেন্দ্র। কারণ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে , টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায় নেবে না মােদী সরকার। ভাকসিন নিয়েই সমস্যা হয়েছে প্রমাণ হলে , চিকিৎসার যাবতীয় খরচ এবং ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাকেই দিতে হবে।
প্রথমদিন পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশের ৩ হাজার ৬ টি কেন্দ্রে করােনার টিকা দেওয়া হবে। এমন এই সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ৫ হাজার করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিটি কেন্দ্ৰে কমপক্ষে ১০০ জন ভ্যাকসিন পাবেন। সেইমতাে প্রথমদিনই এক লপ্তে প্রায় তিন লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর টিকা পাওয়ার কথা । ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রত্যেককে আধ ঘণ্টা টিকাকরণ কেন্দ্রেই বসে থাকতে হবে। উদ্দেশ্য একটাই , পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হওয়া। বাড়ির উপরেও পরও থাকবে নজরদারি। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পেশিতে টিকার প্রথম ডােজের ২৯ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বার সুঁচ ফোটাতে হবে। ওই দ্বিতীয় ভোজের ১৪ দিন পর থেকে কাজ করবে ভ্যাকসিন। আপাতত ৩০ কোটি নাগরিকে সরকারি খরচে টিকা দেওয়া হবে।
প্রথম দফায় তিন কোটি কােভিড যােদ্ধা রয়েছেন “ ইমার্জেন্সি ইউজে’র তালিকায় হবে। রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে , এই শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত হলেও এখনই অন্তঃসত্মা বা সক্রিয় আক্রান্তদের টিকা দেওয়া হবে না। আট সপ্তাহ আগে যারা সুস্থ হয়েছেন, তাদের অবশ্য টিকা দিতে সমস্যা নেই। যদিও সার এই ভ্যাকসিনের শুধু ব্যবস্থাই করছে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপর নজরদারি চালাচ্ছে। অসুস্থতার দায় কেন্দ্রের নেই।
ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা আইসিএমআর – এ মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ডাঃসমীরণ পাণ্ডা বলেন , কোভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। তাই ডিসিজিআইয়ের ছাড়পত্র রেক্ট্রিকটেভ নিয়ন্ত্রিত। যাকে টেকনিক্যালি চতুর্থ বার ট্রায়াল বললেও ভুল হয় না। তাই ট্রায়ালে যেভাবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হয় , এক্ষেত্রেও তাই হবে। সিরামের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এক। কারণ, শনিবার থেকে শুরু হওয়া টিকাকরণ কর্মসূচি সার্বিক নয়। ছাড়পত্রই মিলেছে রেক্ট্রিকটেড ইমার্জেন্সি ইউজের।
আইসিএমআরের শীর্ষ সূত্রে খবর , টিকাকরণ কর্মসূচিতে কারও মারাত্মক তথা অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তার ক্ষতিপূরণ তথা আইনি বিষয়টি সরকারকে দায়িত্ব নেওয়া জন্য দুই কোম্পানির পক্ষ থেকেই আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার তা নাকচ করে দিয়েছে। যদিও এগুলো টিকা থেকেই ব্যাপক শারীরিক সমস্যা হল কি না , তা বিচার – বিশ্লেষণ করবে সাইট এথিক্স কমিটি , ভিসিজিআই এবং ডিএসএমবি। তারপর ক্ষতিপূরণ ইস্যুর প্রশ্ন উঠবে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উঠে আসা যাবতীয় প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হ বর্ধন। টি ডি ডােগরা সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং গবেষকও বিবৃতি দিয়েছেন , দু’টিভ্যাকসিনই নিরাপদ। এরই মধ্যে অবশ্য ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা তথ্য বিতরণ বিধি সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূল এমপি ডাঃ শান্তনু সেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের কাছে এ ব্যাপারে ১৭ দফা প্রশ্ন তুলে চিঠি দিয়েছেন তিনি।