Thursday, April 18, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

এলজেপির সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাত, নীতীশের থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির!

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারের প্রথম দফার নির্বাচন শুরু হতে বাকি আর কয়েক ঘণ্টা। এর আগেই যেন বিজেপি-নীতীশ দূরত্ব বেড়ে চলেছে। এবং ফের নীতীশের বিরোধিতা করা চিরাগ পাসোয়ানের দিকেই যেন ঝুঁকে যাচ্ছে বিজেপি। বিহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও যেই নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা রাখেন, সেখানে তিনি এনডিএর জন্যে ভোট চেয়েছেন। ভাষণের শেষ লগ্নে এসে একবার শুধু নীতীশের নাম উল্লেখ করেন তিনি। এর জেরেই জল্পনা আরও তুঙ্গে।

বিহারের নির্বাচনে এই মুহূর্তে বিজেপির সব থেকে বড় মুখ একদিকে নরেন্দ্র মোদী অন্যদিকে সুশীল মোদী। প্রধানমন্ত্রী বিহারের সাসারামে প্রথম সভা থেকেই স্পষ্ট করে দেন যে বিহারে বিজেপি ছাড়া কোনও গতি নেই নীতীশের। অন্যদিকে, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদীও কার্যত প্রধানমন্ত্রীর সুরে এক সদ্য সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বিহারের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তবে তিনি জানেন, বিজেপি ছাড়া তিনি কাজ করতে পারবেন না।

বিজেপি সাফ বার্তায় জানিয়ে দিয়েছে, তাদের এনডিএ জোটের সরকার বিহারে আসলে, তারা নীতীশকেই বেছে নেবেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। এদিকে এনডিএর হাত ছেড়ে চলে যাওয়া এলজেপির সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাত রয়েছে বলেও বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকের দাবি। আর তা করা হয়েছে নীতীশের জেডিইউকে বিহারের ভোটে চাপে রাখতে। অনেকের মতেই চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি বিহারে বিজেপির বি টিম হয়ে ময়দানে নামছে। এহেন পরিস্থিতিতে বলাই বাহুল্য যে নীতীশের থেকে দূরে চলে যাচ্ছে পদ্ম শিবির।

গত দুই সপ্তাহ ধরেই জেডিইউ এবং বিজেপি সমান্তরাল নির্বাচনী প্রচারে লিপ্ত হয়েছে। দুই দল জোট শরিক হলেও, তাদের প্রচারের রূপরেখায় তা ধরা পড়েনি। শুধু মাত্র উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ছাড়া কোনও বিজেপি নেতাকেই জেডিইউর প্রচার সভায় দেখা যায়নি। এরপর কয়েকদিন আগে সুশীল মোদী করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লেও দুই দলের মধ্যে সেই যোগসূত্রটাও ছিঁড়ে যায়।

বিজেপির ভিডিও প্রচারেও নীতীশের কোনও উল্লেখ নেই, যা অবাক করেছে অনেককেই। এদিকে জেডিইউর পোস্টারে যেমন একা নীতীশেরই ছবি রয়েছে, একই ভাবে বিজেপির পোস্টারে রয়েছে শুধু মাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। জোটের কোনও ইঙ্গিতই যেন মিলছে না দুই দলের হাবভাবে। বিজেপির তরফে যেসব জনসভা করা হচ্ছে, সেখানেও মূলত দলের জন্যেই ভোট ভিক্ষা চলছে, জোটের জন্য নয়।

তবে রাজ্য স্তরের দলীয় নেতৃত্বকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। বিজেপির বড় বড় সব কাট-আউটে শুধু মোদী, পাশে নীতীশের কোনও ছবিই নেই। মোদীর বিহার সফরের প্রথম ইনিংসে তিনটি জনসভায় স্পষ্ট দেখা গিয়েছে যে দুই দলের মেলবন্ধনের সুতোটা যেন প্রায় ছেঁড়ার পথে। এমনকী রাজ্য স্তরে বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যেও নীতীশকে নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

মূলত নীতীশ কুমার যেভাবে পরিযায়ী সমস্যা মোকাবিলা করেছেন, তা পছন্দ হয়নি বিজেপিরও। কয়েক মাস আগে কোটা থেকে পরিযায়ীদের বিহারে ফেরানোর বিষয়ে যোগী আদিত্যনাথ সাহায্য করতে চাইলে, তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নীতীশ। যদিও জোট ধর্মের খতিরে, প্রচারে এসে নীতীশ কুমারকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। তবে অন্দরের খবর, বিজেপি কিন্তু নীতীশের উপর খাপ্পা।

এদিকে নীতীশের স্বচ্ছ ছবি সত্ত্বেও নীতীশকে আরও একবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাইছে না বিজেপির একাংশ। বিজেপির স্পষ্ট দাবি, এনডিএ যদি প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামে ভোট চায়, শুধুমাত্র তাহলেই জোট জিতবে। অর্থাৎ, নীতীশ কুমারের উপর কিন্তু ভরসা হারিয়েছেন বিজেপি নেতারা। এদিকে, বিজেপির যাবতীয় রণকৌশল ক্রমাগত নীতীশ শিবিরকে চাপে রাখছে।

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!