দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : পুরো দেশ যখন করোনা আতঙ্কে ভুগছে, তখন জাতপাতের ভেদাভেদ ভুলে নজির সৃষ্টি করলেন অসমের হাইলাকান্দির এক মুসলিম যুবক। হাইলাকান্দি জেলার বন্দুকমারা বাগানের বাসিন্দা বিদ্যাবতী কুমার নামক একজন আশাকর্মী গলায় অপরেশনের জন্য গত ২৩ জুন শিলচরের এক বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি হন। পরদিনই তার গলায় অপরেশনের হয়। তাকে দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল একমাত্র ছেলে মনোজ কুমার। সে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছিল।
একদিকে মায়ের জটিল অপারেশন, অন্যদিকে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ভীষণ চিন্তায় ছিল সে। হাসপাতালে মায়ের অপরেশন হওয়ার পর একা যখন মাকে তদারকি করা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল, তখনই বন্ধু সুদর্শনপুর ২য় খণ্ডের বাসিন্দা রিয়াজুল হোসেন লস্করকে টেলিফোনে গোটা বিষয়টি জানায় মনোজ। রিয়াজুলও উচ্চমাধ্যমিক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার্থী। বন্ধুর মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে সে জাতপাতের ভেদাভেদ নস্যাৎ করে তড়িঘড়ি ছুটে যায় হাসপাতালে। ২৩ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধু মনোজের মাকে দেখাশোনার দায়িত্ব হাসিমুখে পালন করে রিয়াজুল।
মনোজ এবং রিয়াজুল দু’জনেই জানিয়েছে, তাদের কাছে জাতপাতের কোনও মূল্য নেই, ধর্ম নিয়ে অসহিষ্ণুতার শিক্ষা তারা পায়নি। সব কিছুর উর্ধ্বে তাদের পরিচয় মানুষ হিসেবেই। কবির উদ্ধৃতি দিয়ে তারা বলে, একই রক্ত একই প্রাণ একই বৃন্তের দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। তাদের এই বন্ধুত্ব যেন চিরকাল অমর থাকে এই কামনা করে সবাই যেন জাতপাতের কথা ভুলে গিয়ে ভারতের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেন সেই আহ্বান জানিয়েছে দুই বন্ধু।
মনোজ ও রিয়াজুলের এমন মানবিকতার খবর পেয়ে তাদের শিক্ষাগুরু পূর্ব হাইলাকান্দি আদর্শ বিদ্যাপিঠের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম আলি মজুমদার এবং সহকারী শিক্ষক আব্দুল্লা সেলিম মজুমদার ও সাদ্দিক আহমেদ লস্কর দুজনেরই উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।
আরও খবরাখবর পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রূপে