দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি টাকা বিনোদনের জন্য নয়, পুজো অনুদানের হিসেব দিতে হবে রাজ্যকে, পুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায়ে এমনটাই জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার এই রায়ে আদালত স্পষ্ট বলে দিয়েছে, কোনও পুজো কমিটি ওই টাকা বিনোদনের জন্য খরচ করতে পারবে না। আদালত বলেছে, সরকারি টাকা বিনোদনে খরচ করা যায় না। সেইসঙ্গে এদিন কলকাতা হাইকোর্ট এও বলেছে, টাকা খরচের পূর্ণাঙ্গ হিসেব রাজ্য সরকারকে হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘আমাদের সাধ্য মতো সাহায্য করব ক্লাবগুলোকে। ওদের হাতে টাকা নেই। প্রায় ৩৭ হাজার পুজো কমিটির নাম রেজিস্টার রয়েছে। তার মধ্যে কলকাতায় আড়াই হাজার। মহিলা পরিচালিত পুজোও রয়েছে। এ বার পরিস্থিতি খারাপ। তাই পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে ভালবাসার উপহার দেওয়া হবে।’
গত সেপ্টেম্বরেই পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এই অনুদানের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুসারে, প্রায় ৩৭ হাজার ক্লাবকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুজোর অনুদান দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে তা মিলছে না।
এর বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন দুর্গাপুরের সিটু নেতা। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কোনও আলঙ্কারিক অনুষ্ঠানে সরকারের টাকা খরচ করা যাবে না। কর্মকর্তাদের বিনোদনেও খরচ করা যাবে না সরকারি টাকা।
আদালত স্পষ্ট বলে দিয়েছে অনুদানের টাকার ৭৫ শতাংশ খরচ করতে হবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে। বাকি টাকা পুলিশের মাধ্যমে জনসংযোগমূলক কাজে খরচ করা যাবে। কোনও বিনোদন করা যাবে না।
পুজো কমিটিগুলিকে বিল-ভাউচার সহ হিসেব দিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। পুলিশ সেই হিসেব দেবে সরকারকে। তারপর পুজোর পর হিসেব সংক্রান্ত রিপোর্ট হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
এখানেই শেষ নয়। আদালতের নির্দেশ যাতে পুজো কমিটিগুলির বুঝতে অসুবিধা না হয় সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশকে বলা হয়েছে, আদালত যা যা নির্দেশ দিল তা পয়েন্ট আকারে লিফলেট ছাপিয়ে পুজো কমিটিগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে হবে।