নিজস্ব সংবাদদাতা, দৈনিক সমাচার, কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় ঘোষিত লকডাউনের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে ও করোনা ভাইরাস রোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণে রাজ্য সরকারের কাছে আহ্বান জানালো জামাআতে ইসলামী হিন্দ। করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে রাজ্য সরকার জরুরি পরিষেবার বিভাগ ছাড়া সমস্ত ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কার্যত লকডাউন ঘোষণা করেছে। লকডাউন এর কারণে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, শ্রমজীবি মানুষ, দিন আনে দিন খায়, চাল- চুলাহীন ফুটপাতবাসি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত মানুষদের অবস্থা সব চেয়ে দুর্বিসহ রূপ পরিগ্রহ করেছে । এই অবস্থায় এদের পাশে সর্বাত্মক ভাবে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন জামাআতে ইসলামি হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুর রফিক।
মাওলানা আব্দুর রফিক এক বিবৃতিতে জানান, প্রশাসন ও গণ বন্টন ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে অসহায়, গরিব ও দু:স্থদের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, কোন ভাবেই কেউ যাতে অভুক্ত অবস্থায় না থাকেন। এক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি মত দুয়ারে রেশনের ব্যবস্থা চালু করার আহ্বান জানাচ্ছে জামাআতে ইসলামী হিন্দ ।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ফুটপাথ বাসি, একান্তভাবেই নিঃস্ব ও অসহায় মানুষদের জন্য বিনামূল্যে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। যে সমস্ত ধর্মীয়, সামাজিক সংগঠন ও বেসরকারি সংস্থা ইতিমধ্যেই এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে তাঁদের পাশে সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে রাজ্য সরকারের দাঁড়ানো জরুরি বলে মনে করে জামাআত।
আব্দুর রফিক বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি দীর্ঘ একবছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান গুলি বন্ধ থাকার ফলে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক -যুবতী কাজ হারিয়েছেন। এই সমস্ত শিক্ষিত বেকার যুবক – যুবতীদের ন্যূনতম জীবন ধারণের জন্য অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে মাসিক ভাতার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষা আন্দোলনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ যেমন স্বীকৃতি পাবে অন্য দিকে তাঁদেরকে কোভিড ওয়ারিয়র ভলান্টিয়ার হিসাবেও কাজে লাগাতে পারে রাজ্য সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা কাজ হারিয়েছেন তাঁদেরও ন্যূনতম জীবন ধারণের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
আব্দুর রফিক দাবি জানান, দ্রুততার সাথে রাজ্যবাসীকে ভাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। অক্সিজেনের সংকট মোকাবিলায় সমস্ত ধরনের পরিকাঠামো জরুরি ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে। সরকারি হাসপাতালে বেড এর সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন করোনা হাসপাতাল গড়ে তোলা এই সময় খুবই জরুরি। স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বা সরকারি প্রতিষ্ঠানকে করোনা সেফ হোম হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। পঞ্চায়েত বা পৌরসভাকে এই সমস্ত ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে কাজে নামাতে হবে। স্বাস্থ্যসেবায় কালোবাজারি রুখতে প্রশাসনকে সক্রিয় থাকতে হবে। নাগরিকরা যাতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি। করোনা মহামারী রোধে ও মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কোভিড-১৯ ভলান্টিয়ার গ্রুপ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জামাআতের রাজ্য সভাপতি আব্দুর রফিক। এ বিষয়ে জামাআতে ইসলামী হিন্দ পশ্চিমবঙ্গ শাখা সরকারকে সব ধরনেরসহযোগিতা প্রদান করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।