দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ও রাজ্যসভায় গৃহীত তিনটি কৃষি সংক্রান্ত সংস্কার বিল সম্পর্কে কৃষকদের অবস্থানকে সমর্থন করে, ভারতীয় মুসলমানদের বৃহত্তম সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন জামাআতে ইসলামি হিন্দ সরকারকে অনুরোধ করেছে বিলগুলি প্রত্যাহার করার জন্য। কারণ এগুলি কৃষক এবং গ্ৰাহকদের স্বার্থবিরোধী।
পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের রাজপথে নিয়ে আসা এই ইস্যুতে এক সাক্ষাৎকারে জামাআতে ইসলামী হিন্দ – এর সহ – সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ সালিম বলেছেন, দেশের কৃষিক্ষেত্রে এই সংস্কার কেন্দ্রীক পদক্ষেপ গুলোকে বাস্তবায়িত করতে গত ৫ জুন কেন্দ্রীয় সরকার কতগুলি অধ্যাদেশ জারি করে। সেই অধ্যাদেশ গুলিকে পাকাপাকি আইনি মান্যতা দিতে লোকসভায় কৃষি সংক্রান্ত তিনটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষি কল্যাণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। ওই তিনটি বিলের মধ্যে একটি বিলের লক্ষ্য, দেশের বর্তমান অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন করে নির্দিষ্ট কিছু কৃষি পণ্য মজুত রাখার উধ্বসীমা তুলে দেওয়া। আর একটি বিলের লক্ষ্য, রাজ্যগুলিতে বর্তমানে কৃষিপণ্য বিপণন নিয়ে যে এপিএমসি আইন আছে তা দূর করে আন্তঃরাজ্য কৃষি পণ্যের বাণিজ্য অবাধ করা এবং তৃতীয় বিলটির উদ্দেশ্য, রাজ্যগুলিতে চুক্তিভিত্তিক চাষ ব্যবস্থা আইনসিদ্ধ করা। কিন্তু এই বিলে যা বলা হয়েছে, তা কার্যকর করা কঠিন।
তিনি বলেন, যেহেতু নতুন আইনে কৃষকদের তাদের খামারে উৎপাদন সংগ্ৰহের গ্যারান্টি দেওয়ার কোনও বিধান নেই (যা ভারতের খাদ্য কর্পোরেশন দ্বারা নুন্যতম সমর্থন মূল্য বা এমএসপিতে প্রাপ্ত আইনগুলির অধীন), এর ফলস্বরূপ কৃষকরা তাদের ফসল বা পণ্যের সঠিক দাম পাবেন না। তাঁর মতে, এই আইন বাস্তবায়ন হলে দেশের কৃষিক্ষেত্র পুঁজিবাদীদের হাতে চলে যাবে। এই আইন বলবৎ হলে কৃষিতে বিনিয়োগ আসবে না, কৃষকদের আয়ও বাড়বে না।
নয়া বিল অনুযায়ী, কৃষকরা তাদের মাণ্ডির বাইরে কাউকে পণ্য বিক্রি করতে হলে চুক্তি করবে, এটা সম্ভব হবে না। আন্দোলনকারী চাষিদের অবস্থান সমর্থন করে জামাআতের সহ – সভাপতি বলেন, এই বিলগুলিতে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে বড় ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে একতরফাভাবে ফসলের দাম নির্ধারণ এবং মজুতদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
তার প্রশ্ন , চাষিরা সরকারি মণ্ডির বাইরে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে ফসল বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থা নূন্যতম সহায়ক মূল্য বা তার চেয়ে বেশি দরে ফসল কিনতে বাধ্য থাকবেন, এমন কোনও শর্তের কথা বিলে নেই কেন? জামাআতের পক্ষ থেকে সোমবারও দাবি করা হয় সংসদে এই আইন পাস হয়েছে। অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। জামায়াত আরও বলে রাষ্ট্রপতি যাতে বিলে স্বাক্ষর না করেন। পাঞ্জাব , হরিয়ানা, রাজস্থান সহ বিভিন্ন রাজ্যে কৃষি বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে পথে নেমেছেন যে – সব কৃষকরা, তাদের পাশে আছে জামাআতে ইসলামি হিন্দ। উত্তর ভারতের প্রভাবশালী কৃষক সংগঠন ‘ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন’ – এর আন্দোলনকেও জেআইএইচ সমর্থন করে বলে মুহাম্মদ সালিম বলেছেন ঘোষণা করেছেন।