Saturday, July 27, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

মোদীর মুসলিম বিদ্বেষ! শহিদ অভিধান থেকে বাদ মোপলা বিদ্রোহের মুসলিম নেতাদের নাম

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী গতবছর সরকারিভাবে একটি অভিধান প্রকাশ করেছিলেন। সেই অভিধানে মোপলার আন্দোলনের নেতাদের ও ওয়াগন ট্রাজেডির ফলে আত্মবলিদান দেওয়া অনেকের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে সেই তালিকা থেকে বহু মুসলিম নেতার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তারই প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন ইণ্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের বিধায়ক ও এমপিরা। যেমন, পি কে কুনালিকুট্টি, ই টি মুহম্মদ বশির, পি ভি আবদুল ওয়াহাব ও কে নাবাস কানি।

প্রসঙ্গত, ১৯২১ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল মালাবার রেবেলিয়ন। দক্ষিণ মালাবারের খিলাফত আন্দোলনের সঙ্গে এর যোগ ছিল। ইংরেজদের মদদপুষ্ট জমিদারদের বিরুদ্ধে মাপিলা মুসলিম কৃষকদের লড়াই শুরু হয়। উনিশ শতক এবং বিশ শতকের প্রথম ভাগে এই বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ ভারতে। খিলাফত আন্দোলনকে বজ্রমুষ্টি দিয়ে প্রতিরোধ করতে সচেষ্ট হলে ব্রিটিশদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে মালাবারের এরানাদ ও ভাল্লুভানাদ তালুকের। শুরুতে গান্ধিজি ও অন্যান্য জাতীয়তাবাদী নেতারা প্রথমদিকে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। এই মোপলা বিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন ভারিয়াম কুন্নাথ আহমদ হাজী, আলি মুসলিয়ার প্রমুখ।

যাইহোক, আইইউএমএল নেতারা স্বাধীনতা সংগ্ৰামীদের তালিকা থেকে মুসলিম নেতাদের বাদ দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন না হয় এবং দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় থাকে। ২০১৯ সালে মার্চে ‘শহিদ অভিধান ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্ৰাম ( ১৮৫৭ – ১৯৪৭)’ গ্ৰন্থের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংস্কৃতি মন্ত্রক ও ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চ যৌথভাবে এই বইটি প্রস্তুত করেছিল। আইইউএমএল নেতারা বলেছেন যে, আলি মুসলিয়ার, ভারিয়াম কুন্নাথ আহমদ হাজী, পুন্নাপরা ভায়ালারের মতো বহু মালাবার রেবেলিয়নের নেতা এবং ওয়াগন ট্রাজেডির শিকার হওয়া বহু মুসলিম ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে দুঃসাহসী লড়াই লড়েছিলেন।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, তিন সদস্যের রিপোর্টের বিরুদ্ধে শহীদ অভিধান থেকে তাদের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। সরকারের এমন অন্যায় পদক্ষেপকে সমালোচনা করে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ কিছু ব্যক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবাস্তব। এটা গ্ৰহণযৌগ্য নয় বলে তাদের মত, রাজনৈতিক লাভের জন্য ইতিহাসকে পুনরায় লেখা বা বিকৃত করা যায় না। আগামীতে যে তরুণরা দেশ পরিচালনা করবে তাদের মনে এভাবে বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইইউএমএল নেতারা। এভাবে কার্যত দেশের স্বাধীনতার জন্য যাঁরা সংগ্ৰাম করেছেন এবং প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাদের কার্যত অসম্মানই করা হচ্ছে।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!