Wednesday, November 20, 2024
Latest Newsফিচার নিউজসম্পাদকীয়

দিল্লি দাঙ্গা: কপিল মিশ্ররা বুক ফুলিয়ে ঘুরছে, গর্ভবতী সফুরা জেলে! মুসলিম বলেই কি এই সাজা?

সামাউল্লাহ মল্লিক

নাম – সফুরা জারগার। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিক্ষার্থী সফুরা, গর্ভে একটি সন্তান রয়েছে। ইউএপিএ সন্ত্রাস আইনের আওতায় সরকার তাঁকে গ্রেফতার করেছে। অর্থাৎ একটি গর্ভবতী মহিলা তিহাড় জেলে বন্দি। কারণ? নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র প্রতিবাদ।

বলতে দ্বিধা নেই, সফুরার তিহাড় জেলে থাকার পিছনে একমাত্র কারণ হল সে একজন মুসলমান, ব্যাস আর কিছুই না। একথা লিখতে গিয়ে আমার নিরপেক্ষতা এক সেকেন্ডের জন্যও লজ্জা পাবে না। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ (?) হিসেবে পরিচিত গণমাধ্যম বা তথাকথিত দেশভক্ত সাংবাদিকদের কলম লজ্জায় ভেঙে গেলেও যেতে পারে। জামিয়ায় নির্লজ্জ সরকারী হামলার প্রমাণ জনসম্মুখে এসে গিয়েছে, তারপরও সেখানকার শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী গতিবিধির অভিযোগ চাপানো হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই এফআইআর করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে নির্লজ্জ এই সরকারের। আখলাক, জেএনইউ সভাপতি এবং উন্নাও ধর্ষিতার ঘটনা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। সুতরাং, এই সরকারের নির্লজ্জতা নিয়ে আমি আর অবাক হই না।

নাম – কপিল গুর্জর। শাহীনবাগের সিএএ ধর্নামঞ্চের কাছে বন্দুক নিয়ে আস্ফালন দেখিয়ে গুলি চালিয়ে ছিলেন। এখন তিনি জেলের বাইরে, ২৫ হাজার টাকায় জামিন পেয়েছেন।

নাম – কোমল শর্মা। এবিভিপির একজন কর্মী। সেই কোমল শর্মা, যে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার সাথে জড়িত ছিল। যার ভিডিও, ছবি আজ সবার সামনে। সে এখনও খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

নাম – কপিল মিশ্র। দিল্লি প্রদেশ বিজেপির নেতা। তার দিল্লি দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার ভিডিও, ছবি আজ সবার সামনে। সে এখন বুক ফুলিয়ে ঘুরছে।

এছাড়া প্রবেশ বর্মা থেকে শুরু করে অনুরাগ ঠাকুরের মতো অসংখ্য বিজেপি-আরএসএস কর্মী রয়েছেন, যারা দিল্লির রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার মতো বিতর্কিত বক্তব্য রেখেছে। ফলাফল? তাদের কেউই গ্রেফতার হয়নি।

একটি টিভি সিরিয়ালে গর্ভবতী মা সীতার ঘটনায় চোখের জল ফেলা সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ সফুরা ইস্যুতে নীরব। হয়তো নারী ও মহিলার মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে!

প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে বলেন, সরকারের সমালোচনা করুন, সরকার স্বাগত জানাবে। কিন্তু যাঁরা আসলেই সমালোচনা করে, তাঁদের মুখবন্ধ করার জন্য ইউএপিএ-এর মতো কালো আইন ব্যবহার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে, তিনি নাগরিকদের সমালোচনার মুখ বন্ধ করে দেবেন? তিনি বিভ্রান্তিতে পড়েছেন! আজ একজন সফুরা, আগামীতে হাজার হাজার নাগরিক সফুরা হয়ে উঠবে…

 

Support Free & Independent Journalism

Leave a Reply

error: Content is protected !!