Friday, November 22, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

“মুসলিম সমাজের মর্যাদাহানি হবে” – মন্তব্য করে সুদর্শন টিভি’র সম্প্রচারে নিষেধ সুপ্রিমকোর্টের

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : সুদর্শন টিভি’র দ্বারা প্রচারিত ‛ইউপিএসসি জিহাদ’ অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি কে এম জোসেফের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছেন। শীর্ষ আদালতের মতে, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, পর্ব দু’টি সম্প্রচারিত হলে মুসলিম সমাজের মর্যাদাহানি হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার। ইউপিএসসি পরিক্ষায় মুসলিমদের নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়েছে সুদর্শন টিভিতে।

সেই সম্প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদনের শুনানি চলাকালীন আদালত বলে, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সমস্ত সমস্যা টিআরপি নিয়ে। একজন মানুষের মর্যাদা নষ্ট করে অনেক অনেক বেশি সংবেদনশীল তথ্য পরিবেশন করতে পারে এরা। এক্ষেত্রে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু ঘটনাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের প্রশ্ন, ‛সঞ্চালকের ক্ষোভ ছিল যে, একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রার্থীরা সরকারী চাকরীর সুযোগ পা‌চ্ছে। কতটা প্রতারণা পূর্ণ এটা? এধরনের প্রতারণাপূর্ণ মন্তব্য, ইউপিএসসি পরিক্ষার উপর প্রশ্ন চিহ্ন এঁকে দিয়েছে। কোনও তথ‌্য প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের অভিযোগকে আপনারা কিভাবে অনুমতি দেন। কোনো মুক্ত সমাজে কি এধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হওয়া উচিত? ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মানহানি হচ্ছে। এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রাষ্ট্র এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’

সুদর্শন টিভির আইনজীবী শ্যামা দিওয়ানের উদ্দেশ্য বেঞ্চের মন্তব্য, ভারত যে বিভিন্ন ভাষা আর সংস্কৃতির মিলিত দেশ, তা মানতে পারেননি তাঁর মক্কেল। তাঁকে নিজের ভাবপ্রকাশের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে আদেশ করেছে সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি কে এম জোসেফের পরামর্শ, বৈদ্যুতিক মাধ্যমের পুরো মালিকানা খতিয়ে দেখা উচিত। কোম্পানির বিষয়ে সব কিছু স্যোশাল সাইটে থাকা উচিত যাতে জনসাধারণ সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারে। এরপরই অনুষ্ঠানটিকে উন্মত্ত বলে উল্লেখ্য করে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশ দেয় আদালত। যদিও শ্যাম দিওয়ানার দাবি, এটি একটি তদন্ত মূলক অনুষ্ঠান ছিল।

উল্লেখ্য চাকরির পরীক্ষাকে হাতিয়ার করে সম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করায় হিন্দি সংবাদ মাধ্যম সুদর্শন টিভি। নাম জড়ায় ওই হিন্দি সংবাদমাধ্যমে এডিটর ইন চিফ সুরেশ ছাভাঙকে। ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সুরেশের শাস্তির দাবিতে সরব হতে দেখা গিছে পুলিশ আধিকারিকদের সংগঠন সহ একাধিক নাগরিক মঞ্চকে। সম্প্রতি সুরেশ তার প্রোগ্ৰামের একটি প্রোমো ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেন। সেখানেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় মুসলিমদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। নিয়োগ সংক্রান্ত গোটা প্রক্রিয়ায় বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তুলে তিনি ঘটনাকে ‛আমলা জেহাদ’ নামে আখ্যায়িত করেন।

কি বলা হয়েছিল ওই প্রোমো ভিডিওতে? ওই ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায়, ‛হঠাৎ করেই আইপিএস-আইএএসে মুসলমানরা কিভাবে বেড় গেল? ভাবুন কোনও মুসলিম কর্মকর্তা আপনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিভিন্ন মন্ত্রের সচিব হন তাহলে কি হবে? সুরেশের এই বিদ্বেষ মূলক ভিডিওটি মূহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই তা নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হয় নেটপাড়ায়।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!