Thursday, March 28, 2024
Latest Newsআন্তর্জাতিকফিচার নিউজ

যে পুলিশ বার বার জেল খাটিয়েছেন তাকেই কিডনি দান করলেন এই নারী!

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : অপরাধীরা সাধারণত পুলিশকে এড়িয়ে চলেন। অনেকে আবার মনে-প্রাণে হয়তো অপছন্দ, ঘৃণা করেন। যে পুলিশ অফিসার কাউকে ধরে কারাগারে পাঠান। তারই প্রাণ বাঁচানোর মতো ভালোবাসা অপরাধীর মনে জন্মানো অসম্ভব। একে ফিল্মি কাহিনী মনে হতে পারে।

আমেরিকার আলাবামা স্টেটের বছর চল্লিশের জোসেলিন এক সময় পুলিশের খাতায় নাম তুলে ফেলেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত গ্ৰেফতারও হয়েছেন ১৬ বার। আসলে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। মাদকের নেশায় তার চাকরি, গাড়ি সব চলে যায়। এমনকি চুরিও করতে শুরু করেন তিনি। ফলে পুলিশের খাতায় নাম উঠতে যেমন বেশি সময় লাগেনি তেমন ধরাও পড়েন বেশ কয়েকবার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি টেরেল পটার নামে এক অফিসারের হাতে গ্ৰেফতার হন।

এরই মাঝে একদিন টিভিতে নিজের নাম দেখতে পান জোসেলিন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে ধরতে সাহায্য করার আবেদন করে খবর সম্প্রচার হচ্ছিল। তার নাম উঠে গিয়েছিল মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনালদের তালিকায়। এবার তার যেন টনক নড়ে। এত দিন যা পারেননি এবার সেই সিদ্ধান্তই নিয়ে বসেন জোসেলিন। ঠিক করেন পুলিশের হাতে ধরা দেবেন, মাদকের নেশা ছাড়ার চেষ্টা করবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। পুলিশের হাতে ধরা দিয়ে প্রথম ছয়মাস জেল খাটেন। তার পর তাঁকে রিহ্যাবে রাখা হয় নয়মাস। নিজের সঙ্গে প্রতিদিনের এই লড়াইয়ে এক সময় তিনি জিতে যান‌। মাদকের নেশা থেকে মুক্তি মেলে তাঁর।

পরে ফেসবুকে তিনি জানতে পারেন, এক প্রাক্তন পুলিশ অফিসার কিডনির রোগে ভুগছেন। তার একটি কিডনির প্রয়োজন। এই অফিসার আর কেউ নন, তাকে বার বার গ্ৰেফতার করেছিলেন যিনি, সেই টেরেল পটার। ফেসবুকে টেরেলের মেয়ে পোষ্টটি করেছিলেন বাবার জন্য কিডনি চেয়ে। এবার নিজের মধ্যে আরও একবার যুদ্ধ শুরু হয় জোসেলিনের। এক দিকে তাকে সপ্তাহে প্রায় ৭৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়। আবার যার কিডনি প্রয়োজন, তিনিই বার বার তাকে গ্ৰেফতার করেছিলেন। এই অবস্থায় টেরেলকে কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না। কিন্তু সেই কঠিন সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেন জোসেলিন। যোগাযোগ করেন টেরেলের পরিবারের সঙ্গে, জানান তাঁর সিদ্ধান্তের কথা।

টেরেল জানিয়েছেন, কিডনি দিতে ইচ্ছুক ১০০ জনের একটা তালিকা তৈরি করা হয়, তাতেও নাম আসবে না জোসেলিনের। কারণ জোসেলিনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগই ছিল না। আর জোসেলিনের মতো একজন কেনই বা তাকে কিডনি দিতে যাবেন। কিন্তু ভাগ্যের অদ্ভুত পরিহাস তাদের ফের একবার মিলিয়ে দিল। জুলাই মাসেই একটি হাসপাতালে তাদের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!