দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডে ফের উসকে দিল তবরেজ আনসারির স্মৃতি। দু’বছর আগে বিজেপির শাসনে ঝাড়খণ্ডেই গণপিটুনির জেরে মারা গিয়েছিলেন তিনি। ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মারধর করা হয়েছিল তাঁকে। এবার কংগ্রেসের জোট সরকার। কিন্তু তার পরেও কমেনি মুসলিমদের উপর অত্যাচার। শুধুমাত্র চোর সন্দেহে মুবারক খান নামে এক মুসলিম যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হল। আর সেই মারের চোটেই মৃত্যু হল তাঁর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার রাতে ঝাড়খণ্ডের সিরকা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। আদতে মহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা হলেও, সেদিন ওই গ্রামে গিয়েছিলেন ২৬ বছর বয়সি মুবারক। স্থানীয়দের অভিযোগ, মোটরবাইকের ব্যাটারি এবং চাকা চুরির সময় তাঁকে নাকি হাতেনাতে ধরেন স্থানীয়রা। এরপরই বিদ্যুতের খুঁটিতে বাঁধা হয় মুবারককে। তারপরই চলে বেদম প্রহার। আর তাতেই মারাত্মকভাবে আহত হন ওই যুবক। এরপর খবর পেয়ে ভোর ৩টে নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে মারা যায় মুবারক। এরপরই আধিকারিকরা মৃতদেহটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যান। তারপরই সেটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। রাঁচির পুলিশ সুপার নৌসাদ আলম জানান, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।
মোবারকের পরিবার চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে ঘটনাস্থলে ডেকে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এই লিচিং “পূর্বপরিকল্পিত” ছিল।
মোবারকের এক প্রতিবেশী জাকির খান জানান যে ”তাকে কেউ সিরকা গ্রামে ডেকে নিয়ে যায় এবং সাইকেল চুরির মিথ্যা অভিযোগে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করেছে। তাকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।”
झारखण्ड की राजधानी रांची के अनगड़ा में मॉब लिंचिंग।चोरी के आरोप में मुबारक खान युवक की पीट-पीटकर हत्या।भीड़ में शामिल लोगों ने मिलकर मुबारक को मार डाला।बिजली के खंभे में बांधकर घटना को अंजाम दिया गया। पुलिस आरोपितों की तलाश में छापेमारी कर रही है।#Jharkhand pic.twitter.com/UIp7OvM1B0
— Sohan singh (@sohansingh05) March 14, 2021
জাকির বলেন যে মোবারকের ভাই তাকে বলেছিলেন যে কয়েকদিন আগে মোবারক এবং অভিযুক্ত পুরুষদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল এবং তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল । মোবারকের এক আত্মীয়ও দাবি করেছেন যে এক সপ্তাহ আগে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছেন যে “এই কেসে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক নাহলে আমরা যে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারি।”
এই ঘটনার কথা জানতে পেরেই মৃত যুবকের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মিথ্যে অভিযোগে মুবারককে মারা হয়েছে, এমনই দাবি তাঁর পরিবারের লোকজনের। এদিকে, ভাইয়ের মৃত্যুর পরই ১৯ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন মুবারকের দাদা তাবারক খান। এছাড়া ১৫ থেকে ২৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নামও রয়েছে এফআইআরে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে এই ঘটনায় জড়িত থাকায় আটকও করা হয়েছে। নৌসাদ আলমও জানান, অভিযুক্তদের সাফাই অনেকটাই সন্দেহজনক। তাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনাই উসকে দিয়েছে তবরেজ আনসারির স্মৃতি।