দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : ভণ্ড সাধু বাবা রাম রহিমের কথা মনে আছে? ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ২ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল পঞ্চকুলার আদালত। এ ঘটনায় দাঙ্গা ছড়ায় উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে, নিহত হয় অন্তত ৪১ জন।
এরপর থেকে রোহতক জেলে সাজা ভোগ করছেন রাম রহিম। আজ (২৫ আগস্ট) তার কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হলো। তো জেলে কেমন আছেন ওই ভণ্ড সাধু তা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে বিভিন্ন পত্রিকা।
সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন সংবাদে জানানো হয় – জেলে প্রায় আধ একর জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে রাম রহিমের ব্যারাক। চারদিক ঘেরা ৮ ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে। তার মধ্যে ১৫ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া একটি ঘরে থাকে রাম রহিম।
জেল সূত্রে জানা গেছে, রোজ সকাল ৫টা থেকে ৫.৩০ মিনিটের মধ্যে ঘুম থেকে ওঠে রাম রহিম। এরপর ঘরের সামনে বারান্দায় কিছুক্ষণ হাঁটেন। কখনও যোগাসন করতেও দেখা যায় রাম রহিমকে।
সকাল সাড়ে ৬টায় অন্যান্য কয়েদিদের সঙ্গে রাম রহিমকেও জেলের বাগানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে সবজি চাষ করছেন রাম রহিম। সেখানে ২ ঘণ্টা ধরে ফসলের পরিচর্যা করেন। এরপর ৮টা নাগাদ তাকে সকালের খাবার দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাম রহিমকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে শুনানির জন্য তৈরি করা হয়। শুনানি না থাকলে নিজের কুঠুরিতে বসে বই পড়েন রাম রহিম।
জেল সূত্রের খবর, দুই বছরে চেহারার জৌলুস অনেকটাই কমে গেছে রাম রহিমের। এক বছর আগে যেদিন রাম রহিম রোহতক জেলে এসেছিল সেদিন তার ওজন ছিল ১০৫ কিলোগ্রাম। ২৪ মাসের বন্দিদশার পর তার ওজন কমেছে ১৬ কেজি। এখন তার ওজন ৮৯ কেজি।
চেহারার জৌলুসও ম্লান হয়ে গিয়েছে জেলবন্দি এই ধর্ষকের। তার কুচকুচে কালো দাড়ি দু’দিক থেকে পেকে সাদা হয়ে গিয়েছে। তবে দাড়ি বা চুলে এখনও কাচি পড়েনি।
রাম রহিমের বিষয়ে নজরদারি করেন এমন একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল মিডিয়াকে দূরে রাখা। কারণ, তারা অভিযুক্ত ব্যক্তি জেলে কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন তার আপডেট জানতে উদগ্রীব ছিল। ওই কর্মকর্তার ভাষায়, তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের ওই জেল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ, অনেকদিন ধরেই সেখানে উচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
গুরমিতকে জেলে ঢোকানোর পর তাকে দেখতে তার পালিত কন্যা হানিপ্রীত আর কখনো তাকে দেখতে যান নি। তবে তার পরিবারের সদস্যরা সপ্তাহে একবার দেখা করতে যান। তাদের কাছে গুরমিত তার ময়লা কাপড় দিয়ে দেন। অন্যদিকে ধোয়া কাপড় গ্রহণ করেন। প্রথমদিকে জেলজীবনে অন্ধকার সেলে, নিঃসঙ্গতা তার কাছে ছিল অসহনীয়। স্বাস্থ্যগত সমস্যার অভিযোগ করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি অনেকটা মানিয়ে নিয়েছেন। প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে এয়ারকুলার ব্যবহারের অনুমতি দেন চিকিৎসকরা। ফলে গুরমিত স্বস্তি পান।