দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: রীতিমতো নজিরবিহীন ঘটনা মুরলিধর সেন লেনের রাজ্য বিজেপি দপ্তরে। বিজেপি-র এক রাজ্য স্তরের নেতা দলের রাজ্য সভাপতি-সহ অন্য কয়েকজন রাজ্য নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চাইছিলেন বিভিন্ন ইস্যুতে। এক সাংসদ তথা দলের শীর্ষ স্তরের নেতা তাঁকে ডেকে পাঠালেন দলীয় কার্যালয়ে। তারপরেই ঘটে গেল ধুন্ধুমার কাণ্ড। হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি পেরিয়ে ঘুষি মেরে দলীয় দপ্তর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শনিবার দুপুরের এই ঘটনা ইমেল করে জানানো হল দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা-কে।
ঘটনাটা এবার খুলেই বলা যাক। জানা যাচ্ছে, কামারহাটির বিজেপি নেতা, প্রাক্তন আরএসএস কর্মী অমিতাভ রায়। ভোটের পর থেকেই দিলীপ ঘোষ সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি রাজ্যনেতার বিরুদ্ধে টিকিট বণ্টন সহ নানা অভিযোগে সরব ছিলেন। দলে আলোচনার জন্য চিঠিও দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। গতকাল বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ডাঃ সুভাষ সরকারের ডাকে এই বিষয়ে আলোচনার জন্য দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছন। তিনি জানান, ‘আমি দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আরএসএস ও বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। বহুবছর ধরে আমাদের রাজ্যের বিজেপি কর্মীদের ওপর রাজ্য ও জেলা বিজেপির নেতাদের দ্বারা অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলছে। এই সব ঘটনা নিয়ে আলোচনা এবং সমস্যার সমাধান করার জন্য ডাঃ সুভাষ সরকার আমাকে বিজেপি সদর কার্যালয় ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনে ডাকেন। ওনার কথা মতো আমি রাজ্য অফিসে আমাদের রাজ্য সম্পাদিকা শর্বরী মুখার্জির সঙ্গে সেখানে ঢুকলে রাজ্য যুবমোর্চার সদস্য কৌশিক ঘোষ প্রথমে আমায় অকথ্য গালাগাল করে এবং আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে ধাক্কা দেয় ও পার্টি অফিসে ঢুকতে বাঁধা দেয়। এরপর অনেক কষ্টে শর্বরী মুখার্জিকে নিয়ে ঢুকলেও কৌশিক আমার গলা টিপে ধরে হত্যা করতে উদ্যত হয় এবং ধাক্কা দিয়ে পার্টি অফিস থেকে বের করে দেয়।’
গোটা বিষয়টি গতকালই ইমেল মারফত জে পি নাড্ডা-কে জানিয়েছেন বলে দাবি অমিতাভর। আজ এফআইআর করছেন ওই যুব নেতার বিরুদ্ধে। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ভোটের আগে থেকেই রাজ্য বিজেপিতে আদি বনাম নব্য সংঘাত চলছে। তথাগত রায়, শমীক ভট্টাচার্য, দুধ কুমার মণ্ডলের নাম করে জে পি নাড্ডাকে জানান হয়েছে, দলের পুরনো নেতারা এখন কোণঠাসা। এই পরিস্থিতিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কী পদক্ষেপ নেবেন সেদিকে নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।