Thursday, November 21, 2024
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

এতো টাকা গেল কোথায়? কর্মীদের সংঘর্ষে ধুন্ধুমার বিজেপির কার্যালয়ে

ছবি- প্রতীকী

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: টাকার হিসেব নিয়ে ধুন্ধুমার কান্ড বাঁধল বিজেপির কার্যালয়ে। পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে তখন শেষমেষ পুলিশ ডাকতে হয়। একে নির্বাচনে ভরাডুবি, তার উপর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তুমুল অশান্তি বর্ধমান জেলা বিজেপি কার্যালয়ে। বুধবার বিজেপি জেলা অফিসে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল মণ্ডল সভাপতিদের। সেই বৈঠকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের কাছে কার্যত গলাধাক্কা খেতে হয়েছে পদ্ম শিবিরের জেলা নেতৃত্বকে। অশান্তির কথা মেনে নিলেও মারপিট হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা নেতারা।

 

এবারের নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীদের ৭০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকার হিসেব নিয়েই এদিনের অশান্তির সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। এদিন বৈঠকের পরে খণ্ডঘোষের বিজেপি প্রার্থী বিজন মণ্ডল বেরিয়ে এলে প্রকাশ্যেই তাঁকে জামা ধরে টানতে টানতে ফের ভিতরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপি কর্মী সুশান্ত সাহা বলেন, ‘৭০ লাখ টাকা করে এক এক জন পেয়েছে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের লোকেরা এখনও টাকা পায়নি। আমরা ঘরছাড়া। পরিবারের লোকেরা সংসার চালাতে পারছে না। আর নেতারা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা কি এ জন্য পার্টি করেছিলাম?’

 

অশান্তির জেরে গন্ডগোল ঠেকাতে ডিভিসি মোড়ের ওই পার্টি অফিসে পুলিশ ডাকা হয়। তবে বর্ধমান থানার পুলিশ পার্টি অফিসের ভিতরে যায়নি। বর্ধমান দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘এটা ঠিক যে নানা প্রতিকূলতার জন্য ফলপ্রকাশের পরে পার্টি কর্মীদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারিনি। এর ফলে একটা ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। তবে কোনও মারামারি হয়নি। হিসেব নিয়ে পার্টির অভ্যন্তরে আলোচনা হয়েছে। রাজ্যের কাছে আমার কেন্দ্রের হিসেব পাঠানো হয়েছে।’ জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বর্তমানে অসুস্থ। অস্থায়ী দায়িত্বে রয়েছেন সহ-সভাপতি প্রবাল রায়। তিনি বলেন, ‘আমরা হিসেব রাজ্যের কাছে পাঠিয়েছি। তাঁরা বিষয়টি দেখবেন। কিছু পার্টি কর্মীর মধ্যে ক্ষোভ ছিল। বিপদের সময়ে তাদের পাশে সবাই থাকতে পারিনি। এটা স্বাভাবিক ক্ষোভ। তবে বাইরে থেকে যারা গালমন্দ করেছে তারা পার্টির কেউ নয়।’

আর্থিক অভিযোগ নিয়ে খণ্ডঘোষের প্রার্থী বিজন মণ্ডলের বক্তব্য, ‘নির্বাচনের সময় আমাদের বিধানসভা এলাকায় একটা কমিটি তৈরি হয়েছিল। সেই কমিটি টাকা খরচ করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাই এক জায়গায় না হওয়ায় সমস্য হয়েছিল। আমাকে কাছে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছে ওরা। আমি ওদের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নিয়েছি।’ এদিন পার্টি অফিসের ভিতরে বেশ কয়েকজন নেতাকে মারধরও করা হয়েছে বলে বিজেপির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।

 

ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের গলায় কটাক্ষের সুর। বলেন, ‘তবু ভালো যে বিজেপি নেতারা বলেননি তৃণমূলের লোকেরা গিয়ে অশান্তি করেছে। এটাই ঢের। এই পার্টি অফিসই তো ভোটের আগে গোষ্ঠীকোন্দলে ভাঙচুর হয়েছে। আগুন জ্বলেছে। তখন বিজেপির নেতারা সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছিলেন তৃণমূল করেছে। পরে সত্যি প্রকাশ পায়। এত নির্লজ্জ একটা দল এর আগে আমরা দেখিনি।’

Leave a Reply

error: Content is protected !!