Saturday, July 27, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

যোগীরাজ্যে উগ্ৰহিন্দুত্ববাদীদের হাতে খ্রিস্টানরাও লাগাতার নির্যাতনের শিকার

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: যোগী রাজ্যে মুসলিম নির্যাতন করা মাঝে মধ্যেই তা প্রকাশ পেয়েছে। মাঝে দেখা গিয়েছে দলিতদের উপর নির্যাতন। এর পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে সমানভাবে খ্রিস্টানরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। পথে ঘাটে রাস্তা আটকে তাদের হয়রানি করা হয়, এমন ঘটনাও শোনা যায় বাড়ি মধ্যে ঢুকে বাইবেল পুড়িয়ে দেয় এই উগ্ৰহিন্দুত্ববাদী দল। হিন্দুবাদীরা এই হয়রানির ভিডিও ছবি তোলে, এবং সেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়।

বর্ণবাদ বিরোধী খ্রিস্টান সংগঠন পার্সিকিউশন রিলিফের অভিযোগ, ২০১৪ সালের মে মাসের পর থেকে এই ঘটনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ভাবে সংখ্যালঘু খ্রিস্টাব্দের নির্যাতন করা হয়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির অভিযোগ, খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠান গুলো হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরিত করে। আর সেই অভিযোগেই নিশানা করছে সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের। যদিও এই অভিযোগ পুরোটাই ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে জানিয়েছেন পার্সিকিউশন রিলিফ। চলিত বছরের প্রথমদিকে খ্রিস্টান নিগ্ৰহের ২৯৩ টি ঘটনা রেকর্ড করেছে পার্কিকিউশন রিলিফ।

২০১৯ সালে দেখা যায় ৫২৭ টি খ্রিস্টান হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালে খ্রিস্টান নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ৪৪৭টি, ২০১৭ সালে ৪৪০টি ঘটনা ঘটে। এবং ২০১৬ তে ৩৩০টি ঘটনা ঘটে। ২০১৬ এর জানুয়ারি মাস থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত খ্রিস্টাব্দের উপর হামলা বা নিগ্ৰহের মোট ঘটনার সংখ্যা ২০৬৭ বলে জানিয়ে পার্সিকিউশন রিলিফ। উগ্ৰহিন্দুবাদীদের হাতে কি ভাবে খ্রিস্টান নির্যাতন হয়, এনিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে পাসিকিউশন রিলিফ সংগঠন।

পার্সিকিউশন রিলিফের প্রতিষ্ঠাতা শিবু টমাস বলেছেন, খ্রিস্টান নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়। তাঁর দাবি, এই ভিডিও গুলো ছড়িয়ে উদ্দেশ্য হচ্ছে, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ করে সংখ্যালঘুদের ছবিনষ্ট করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও তে দেখা গিয়েছে একদল মানুষ শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে খ্রিস্টাব্দের উপর। কোথাও আবার উগ্ৰহিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি শিশু ও মহিলাদের টার্গেট করে। এবং এই সব খ্রিস্টান নির্যাতনের কাজ তাঁরা গর্বের সঙ্গেই প্রকাশ করা হচ্ছে। আর এর জন্য এদের মনে কোনও অনুশোচনা বোধ নেই। এরকমই এক ভিডিও তে একজন গেরুয়া পরিহিত লম্বা লোককে দেখা গেছে। তার সঙ্গে ক্যামেরা হাতে রয়েছে সাঙ্গোপাঙ্গরাও । এরা উত্তরপ্রদেশের এক সড়কে দুই খ্রিস্টান যাজকের পথ আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সেই মুহূর্তে সেই স্থানে একজন মহিলাও ছিলেন।

সেই যাজককে গেরুয়া পরিহিত লম্বা লোকটি জিঙ্গাসা করছে, ‘ আপনাকে কি এই মহিলা গরিব বলে পরিচয় দিয়েছে? এবং এরপর আপনি তাদের সাহায্য করতে খ্রিস্টান ধর্মগ্ৰহণ করার কথা বলেছেন? খ্রিস্টান যাজক জং বাহাদুর উত্তর দেন , ‘ আপনি যা খুশি ভাবতে পারেন’। যাজকের উত্তর শুনে গেরুয়া পরিহিত সেই হিন্দুবাদী দলের সদস্য তাদের অকথ্য গালিগালাজ করা শুরু করেন। বলেন, ‘ এখানে আবার দেখতে পলে আপনার পা ভেঙে ছুঁড়ে ফেলে দেব। এখানে যেন আর না দেখতে পায়।

এরপর উগ্ৰবাদী সেই ব্যক্তি বলতে থাকে, ‘ আমি বজরং দলের হয়ে কাজ করি। এরপর জং বাহাদুরের সঙ্গে থাকা আর এক যাজক বাচ্চে লালের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। তাকে জোর করে ক্যামেরার সামনে নিয়ে গিয়ে তার নাম , ঠিকানা, ও নম্বর বলতে বাধ্য করা হয়। সবকিছু রেকর্ড করা হয়ে গেলে সেই দুই ধর্ম যাজককে কেটে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। এত কিছু ঘটনা পর পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে। যাজক বাচ্চে লাল জানিয়েছে, ‘ পুলিশ খবর পেয়ে তদন্তে আসে, পুড়ে যাওয়া বাইবেল গুলি দেখতে পায়, কিন্তু উগ্ৰবাদীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!