দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : জাতীয় পর্যায়ের নিউজ চ্যানেল ‛টাইমস নাও’ ও ‛আজতক’ একটি চিনা কবরস্থানের ছবি সম্প্রচার করেছে এই বলে যে, সেখানে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত চিনা সৈনিকদের কবর দেওয়া হয়েছে। আসলে সেটি হল চিনা সেনাবাহিনীর তৈরি ১৯৬২ তে ইন্দো-চিন যুদ্ধে নিহত চিনা শহীদদের সমাধিস্থল।
ওই দুই খবরের চ্যানেল যে ভিডিওটি সম্প্রচার করেছে, সেটি হল কাঙ্গজিওয়ার সমাধিস্থল, যেটি ১৯৬২ সালের ইন্দো-চিন যুদ্ধে নিহত সেনা ও গণমুক্তিফৌজের শহীদের জন্য তৈরি করা হয়। পরবর্তী সময়ে শিঙ্গজিয়াঙ্গ প্রদেশে অবস্থিত ওই কাঙ্গজিওয়া সমাধিস্থলে আকসাই চিনে যে সব চিনা সৈনিক মারা গেছেন তাঁদেরও কবর দেওয়া হয়।
গত ৩১ আগস্ট আজতকে রোহিত সারদানার একটি শো’তে দাবি করা হয় যে, ভিডিওটি এক্সক্লুসিভ এবং ‛গালওয়ানের প্রমাণ’। ওই অনুষ্ঠানে সারদানা বলেন, “গালওয়ান সংঘর্ষে যে চিনা সেনারা নিহত হয়েছেন, এই হল তার প্রমাণ। এইগুলি হল গালওয়ানে নিহতদের কবর।” এর পর সারদানা কয়েকটি ছবি দেখান। যেমন, একটি স্মারক স্তম্ভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেনারা, আকাশ থেকে তোলা কবরস্থানের ছবি এবং একজন সৈনিকের একটি সমাধিপ্রস্তর মোছার দৃশ্য। ভিডিওটি ট্যুইটও করেন সারদানা।
गलवान में मारे गए चीनी सैनिकों की क़ब्रों की तस्वीरें हैं. जिसको गिनना हो गिन ले. और दोबारा सुबूत माँग कर भारतीय सेना के शौर्य पर सवाल न उठाए. https://t.co/DkcKUVnIP7
— रोहित सरदाना (@sardanarohit) August 31, 2020
অন্যদিকে টাইমস নাও-ও ওই একই কাঙ্গজিওয়া যুদ্ধ স্মৃতিসৌধের ছবি প্রকাশ করে দাবি করে, “ভারতের কাছে আগেই ৩৫ চিনা হতাহতের খবর ছিল। কিন্তু এই ছবিগুলি থেকে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, ৩৫ জনেরও বেশি মারা যায়।” চ্যানেলটি তাদের অনুষ্ঠানে ছবিগুলি দেখায় ও তাদের ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনেও প্রকাশ করে। এবং সেই সঙ্গে বিভ্রান্তিকর দাবি করে বলা হয় যে, ‛চিনা হতাহতের প্রমাণ’ হল কবরস্থানের ওই ছবিগুলি।
#Breaking | 47 days later after the Galwan Valley clash, proof of PLA casualties is finally out. Pictures of graves of Chinese soldiers killed in the clash are going viral on social media. These pictures prove that our braves took down more than 35 Chinese soldiers. pic.twitter.com/rBRbrLdpEX
— TIMES NOW (@TimesNow) August 31, 2020
‛আজতক’-এর সম্প্রচারিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সেটি ট্যুইটারেও রয়েছে। আর সেটির বাঁ দিকের কোণে চিনা মিডিয়া সিসিটিভি-র লোগো দেখতে পাওয়া যায়। সেটিকে সূত্র ধরে ম্যান্ডারিন ভাষায় কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে চিনা ভিডিও শেয়ার করার সাইট বিলিবিলি-তে ওই একই ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। এরপর চিনা সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ওয়েইবো-তে ভিডিওটির খোঁজ করলে, সিসিটিভি মিলিটারি চ্যানেলের সরকারি হ্যান্ডেলের ২৪ অগস্ট ২০২০-এ করা একঠি পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়।