Saturday, July 27, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

গুজরাতে গুণ্ডাদমন আইনের আওতায় ‛লাভ জিহাদ’

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : লাভ জিহাদও গুণ্ডা ও সমাজবিরোধী আইনের আওতায়! আইনকে হাতিয়ার করে সংখ্যালঘু দমনে ব্যবহারের নজির আজকাল আকছার হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার নজির গড়েছে। গুণ্ডা ও সমাজবিরোধীদের কঠোর হাতে নতুন বিল পাশ হল গুজরাত বিধানসভায়। গুজরাতের বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্ৰেস এই বিলের বিরোধিতা করে বলে, রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনে করতে এই আইনের অপব্যবহার করতে পারে রূপানি সরকার।

আগে গুজরাতে গুণ্ডামির অভিযোগে কেউ গ্ৰেফতার হলে, তাকে ১৫ দিন হেফাজতে রাখা যেত। নয়া প্রস্তাবিত আইন মোতাবেক আদালতে পেশ করার পর অসামাজিক কাজের অপরাধে গ্ৰেফতার ব্যক্তিদের এখন ৩০ দিন পর্যন্ত হেফাজতে রাখতে পারে পুলিশ। অর্থাৎ আদালতে পেশ করার পর এক মাস পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখা যেতে পারে। এতেই শেষ নয়, এতদিন পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনায় ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে হতো পুলিশকে। নতুন আইনের মাধ্যমে এই ৬০ দিনকে ৯০ দিন করা হয়েছে। গুণ্ডামি ও মাস্তানির জন্য সাত থেকে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে এই বিলে। এছাড়াও জরিমানা করা হতে পারে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

মজার ব্যাপার হল, এই অপরাধের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে লাভ জিহাদকেও। বলা হয়েছে, লাভ জিহাদের মাধ্যমে মহিলাদের শোষণও এই গুণ্ডা আইনের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ লাভ জিহাদও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।

প্রস্তাবিত আইনে গুণ্ডার সংজ্ঞাতে বলা হয়েছে, ‛গুণ্ডা’ হল এমন একজন ব্যক্তি যে নিজের ক্ষমতা বলে মানুষকে হুমকি দেয়, অত্যাচার করে। তা সে একা করতে পারে বা একটা দল পাকিয়ে করতে পারে। আইনে এও বলা হয়েছে, যারা জনজীবনের শান্তি নষ্ট করতে অপরাধমূলক কাজ করে তারাই হল গুণ্ডা বা সমাজবিরোধী। আইনে গুণ্ডা কার্যকলাপ বলতে মাদক পাচার, জবরদখল, তোলাবাজি, সম্পত্তির ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি। শিশু ও মহিলা পাচারের ঘটনাকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু লাভ জিহাদকেও এই আইনের আওতায় আনায় বিরোধীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। কংগ্ৰেস এই বিল নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব ও মানবাধিকার কর্মীদের একাংশ এই বিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের আশঙ্কা আইনের অপব্যবহার হতে পারে। পুলিশ যাকে তাকে গ্ৰেফতার করে এই আইনে এক মাস হেফাজতে রেখে দিতে পারে। তা ছাড়া রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতেও এই আইনকে হাতিয়ার করা হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

বিলটি বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর তা রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে। রাজ্যপাল সই করলেই তা আইনে পরিণত হবে‌‌। এই মাসের গোড়ায় এই মর্মে গুজরাতে একটি অর্ডিন্যান্স তথা অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। সেই অধ্যাদেশ বদলে এবার বিল পাস হল বিধানসভায়। গুজরাত বিধানসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সমস্যা নেই। তাই বিল পাশেও অসুবিধা হয়নি। বিল পাশের পর গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদীপ সিং জাদেজা বলেছেন, রাজ্যে শান্তি শৃঙ্খলা সুষ্ঠু ভাবে বজায় রাখতেই এই আইন জরুরি হয়ে পড়েছিল। তাই তা পাশ করাতে দেরি করল না সরকার।

গুজরাটের বিরোধী দলনেতা পরেশ ধানানি এদিন বলেন, অপরাধিদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ফৌজদারি আইন রয়েছে। নতুন আইনের প্রয়োজন ছিল না। বিজেপি সরকার নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই আইন প্রণয়ন করেছে।

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!