Thursday, March 28, 2024
Latest Newsদেশফিচার নিউজ

দিল্লি দাঙ্গা: অভিযোগ সত্ত্বেও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লি পুলিশ

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক : বিদ্বেষ ও প্ররোচনামূলক ভাষণ দেওয়া সত্ত্বেও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ভর্ৎসিত হতে হয়েছে দিল্লি পুলিশকে। অভিযোগ, এইসব বিজেপি নেতার উস্কানি ও প্ররোচনামূলক ভাষণের কারণেই দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। আর সেখানে একতরফা টার্গেট করা হয়েছিল শুধু মুসলিমদেরই। সেই হিংসার ঘটনায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এমনই দাবি করেছে সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেল ‛এনডিটিভি’।

টিভি চ্যানেলটির তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, তারা খোঁজ নিয়ে দেখেছে এর মধ্যে চারটি অভিযোগের ক্ষেত্রে ১০০ দিন পরও কোনও এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করেনি দিল্লি পুলিশ। এই অভিযোগগুলিতে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, কারওয়াল নগরের বিধায়ক মোহন সিং বিস্ত, মুস্তাফাবাদের প্রাক্তন বিধায়ক জদগীশ প্রাধান, বাগপতের সাংসদ সত্যপাল সিং, জোহরিপুরের কাউন্সিলর কানহাইয়া লাল প্রমুখের নাম ছিল।

একটি অভিযোগ করেছিলেন মুহাম্মদ জামি রিজভি। ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি কপিল মিশ্র উত্তর-পূর্ব দিল্লির কারদামপুরিতে আসেন যেখানে সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছিল। সেখানে কপিলের সঙ্গে যারা ছিল তাদের হাতে বন্দুক, তলোয়ার, ত্রিশূল, লোহার রড, লাঠি ছিল। সেখানে কপিল হুমকি দিয়েছিলেন সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের ‛উচিত শিক্ষা’ দেওয়া হবে। তারপরই কপিলের সাঙ্গপাঙ্গরা রাস্তায় যাতায়াতকারী গাড়িগুলি থামিয়ে বেছে বেছে শুধু মুসলিম, দলিতদের উপর হামলা চালায়। পুলিশের সামনেই এসব হয়েছে।

কপিলের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ ইলিয়াস নামে এক ব্যক্তি ১৭ মার্চ একই অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর দাবি, ২৩ ফেব্রুয়ারির দিন কপিল মিশ্র ও তাঁর লোকজন প্রকাশ্যে হামলা চালায়। কপিলের হাতে লাঠি ছিল। তিনি হামলায় প্ররোচনা দিচ্ছিলেন। কারওয়াল নগরের বিধায়ক মোহন সিংয়ের বিরুদ্ধে ১৯ মার্চ অভিযোগ করেছিলেন রুবিনা বানো। তাঁর অভিযোগ, চাঁদবাগে সিএএ বিরোধী আন্দোলন স্থলের কাছে দলবল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মোহন। তাদের সবার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সেখানে এক পুলিশকর্তা ফোনে কপিল মিশ্রকে বলেন, ‛চিন্তা করবেন না, লাশ চারদিকে এমনভাবে ছড়িয়ে দেব যা পরবর্তী কয়েক প্রজন্ম মনে রাখবে।’

কপিলের বিরুদ্ধে ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ করেছিলেন জাকির মালিক নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, কপিল মিশ্রর লোকজন তাঁর দোকান লুট করেছে। ১৯ মার্চ অভিযোগ দায়ের করেন নিসার আহমেদ। তাঁর দাবি, স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর কানহাইয়া লাল বিদ্বেষ ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‛হিন্দুরা জেগে ওঠো। বন্দুক আনো। তোমাদের সব অস্ত্র নিয়ে এসো। ওদের (মুসলিমদের) ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দাও। লুট করে নাও।’ অথচ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে এফআইআরের সঙ্গে এইসব অভিযোগ পত্র জুড়ে দেওয়া হয়েছিল তাতে কোথাও বিজেপি নেতাদের নাম রাখা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এনডিটিভি প্রশ্ন করলে তাদের কাছে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জগদীশ প্রধান, মোহন সিং, কানহাইয়া লাল, সত্যপাল সিংরা, জগদীশ প্রধান বলেন, তাঁর বদনাম করতে এইসব অভিযোগ আনা হচ্ছে। মোহন সিং দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওটা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। কানহাইয়া লালের দাবি, ২৪ ফেব্রুয়ারির ঘটনার সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন।

 

আরও খবরাখবর পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রূপে

Leave a Reply

error: Content is protected !!