নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: বেশ কয়েকদিন যাবত ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর আক্রমণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সম্প্রদায়িক গোষ্ঠী পাল বাজার, দরগা বাজার, পানিসাগর ও নারোল টোলায় মসজিদে আক্রমণ করেছে। সেই সঙ্গে কিছু মহল্লা ও দোকানপাটেও আক্রমণ করেছে। এছাড়াও মহারানী, কাকড়াবন প্রভৃতি এলাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে আক্রমণ চালানো হয়েছে। এই আক্রমণে অনেকই আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বই পুস্তক পুড়িয়ে দেওয়ার ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে।
ত্রিপুরার এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জামাআতে ইসলামী হিন্দ।
জামাআতে ইসলামী হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আমীর মাওলানা আব্দুর রফিক এক বিবৃতিতে জানান, ত্রিপুরার হিংসাত্মক ঘটনাকে অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক রাজ্য সরকার। আমরা লক্ষ্য করছি রাজ্য প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আব্দুর রফিক আরও বলেন, বাংলাদেশের কুমিল্লার ঘটনাকে হাতিয়ার করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নানা ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ তৈরি করার অপচেষ্টা করছিলো। কিন্তু বাংলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সেই অপতৎপরতা রুখে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ত্রিপুরায় সেই গোষ্ঠী অস্থিরতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
আব্দুর রফিক বলেন, এই হিংসা ও অস্থিরতা বন্ধে রাজ্য সরকারের নিরবতা মুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ তৈরী করেছে। রাজ্য সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে আইনের শাসন বলবৎ করে এই হিংসা বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জামাআতের ত্রিপুরা রাজ্যের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ইতিমধ্যেই আক্রান্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানসহ দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় জামাআতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল ত্রিপুরায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
মাওলানা আব্দুর রফিক ত্রিপুরার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা ও দল বাংলায় প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন ত্রিপুরার ঘটনায় তাদের শীতল নিরবতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এই বৈষম্যমূলক মানসিকতা থেকে বাংলার রাজনৈতিক দল, নেতৃবৃন্দ ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের বেরিয়ে আশার আহ্বান জানান আব্দুর রফিক।
তিনি বলেন, কিছু অশুভ ও বিভেদ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলায় অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে, এই জন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পরিস্থিতি উত্যক্ত করছে এই বিষয়ে সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। তিনি সমস্ত মানুষের কাছে সর্বস্তরে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।