Friday, March 14, 2025
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

করোনাকালে রক্ত সংকট, সমস্যা মেটাতে ত্রাতার ভূমিকায় ডাক্তারী পড়ুয়ারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৈনিক সমাচার, ডায়মন্ড হারবার: করোনা সংকটকালে রক্ত সংকটে ভুগছে গোটা রাজ্যের প্রতিটা ব্লাড ব্যাংক। সংকটকালীন পরিস্থিতিতে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনই রক্ত দানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারায় সমস্যার সম্মুখীন রোগী ও রোগীর পরিবার পরিজন। এহেন পরিস্থিতিতে রক্তের যোগান মেটাতে এগিয়ে এলো ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা।

আজ ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে উৎসবমুখী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সূচিত হল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রথম রক্তদান শিবির ‛রক্তনীড়’। এই শিবিরের সূচনালগ্নে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক উৎপল দাঁ, মেডিকেল সুপার ইনটেনডেন্ট রমাপ্রসাদ রয়, ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক শুভ্রা মণ্ডল এবং অন্যান্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে কলেজের প্রিন্সিপাল ডাক্তার উৎপল দাঁ বলেন, “মুমূর্ষু রোগীদের সহায়তায় কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের এই মানবিক উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করছি আগামী ভবিষ্যতে এভাবেই মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে শিক্ষার্থীরা।” অনুষ্ঠানের অন্যতম অতিথি ডা: রমাপ্রসাদ রয় বলেন, “ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের ব্লাড ব্যাংকের উপর নির্ভর করে আছে প্রায় দেড় হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী। তাদের পর্যাপ্ত রক্তের চাহিদা মেটাতে শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ প্রসংশনীয়। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের এই আয়োজন ‛রক্তনীড়’ সংকটকালীন প্রসূতি মায়েদের রক্তের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাবে বলে আশা রাখি।”

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক উন্নতি সাধন হলেও এখনও পর্যন্ত কৃত্রিম রক্ত উৎপাদনের কোনো ব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই চিকিৎসা জগতে যে সমস্ত জায়গায় রক্তের প্রয়োজন যেমন ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া, প্রসূতি মায়েদের, অর্থোপেডিক অপারেশন ও সড়ক দুর্ঘটনাগ্রস্থদের রক্তদানের মাধ্যমে তা পূরণ করা সম্ভব।

দেশের প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ রক্ত দানে সক্ষম হলেও তাদের মধ্যে কেবল মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ রক্ত দান করে থাকেন। রক্তনীড় উদ্যোক্তারা মনে করেন এই প্রোগ্রামের মধ্য দিয়ে রাজ্যব্যাপী আরো বেশি সংখ্যক মানুষ রক্ত দানে উদ্বুদ্ধ হবেন। আজকের এই বিশেষ রক্তদান শিবিরের মধ্য দিয়ে মোট ৪০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। উদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রথম বর্ষের পড়ুয়া আবু হাসান মোল্লা জানান, “আমাদের রক্তদান হয়তো কোনো মুমূর্ষু রোগীর কাছে জীবনের নতুন বার্তা হয়ে পৌঁছাবে। রক্ত সংকটে রোগীর পরিজনের অসহায় হয়ে ছোটাছুটি আমাদেরকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবিয়ে তুলেছে, আর তা থেকেই এই ‘রক্তনীড়’।”

Leave a Reply

error: Content is protected !!