দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: এই নন্দীগ্রাম থেকেই রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের উত্থান হয়েছিল এক সময়ে। আবার এই নন্দীগ্রাম থেকেই ফের দলের পুনর্জন্মের কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ‘আমি যদি নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াই, কেমন হয়?’ , সভা থেকে জনগণের উদ্দেশ্যে এমনটাই প্রশ্ন করলেন মমতা। শুভেন্দু-গড়ে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভোট-যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ জানালেন তিনি। মমতা জানালেন, নন্দীগ্রামের প্রার্থী তিনিই।
শুভেন্দু–গড়ে দাঁড়িয়ে তেখালির মাঠে মমতা এত বড় চাল চেলে দেবেন, তা হয়ত স্বপ্নেও কল্পনা করেনি রাজনৈতিক মহল। বিধায়ক পদ ছাড়ার আগে নন্দীগ্রামেরই বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর পুরনো দলনেত্রীকে লাগাতার আক্রমণ করেছেন এই নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই। এদিন মমতার পাল্টা জবাবের দিকেই চোখ ছিল রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেন না দলনেত্রী। উল্টে অধিকারী গড়ে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভোট–যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি। মমতার এই রাজনৈতিক ‘চাল’ বা ‘ফাঁদ’, যাই বলা হোক না কেন, এখন দেখার, শুভেন্দু তাতে পা বাড়ান কি না!
নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা যে খুব আগে থেকেই করা ছিল, তা কিন্তু নয়। আবেগের বশেই ঘোষণা করে ফেলেছেন। শুরুতে বলছিলেন, ‘নন্দীগ্রামে ভাল প্রার্থী দেব। এখনই নাম বলছি না।’ পরক্ষণেই জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘নন্দীগ্রামের আসন তো সংরক্ষিত নয়। আমি যদি নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াই, কেমন হয়?’ ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে জনতার চিৎকার, উচ্ছ্বাস। তারপরেই বলতে থাকেন, ‘আমার একটু মনের জায়গা। আমার ভালবাসার জায়গা। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে অনুরোধ করব, নন্দীগ্রামের পাশেও আমার নামটা লিখে রাখতে। আমার ইচ্ছে হয়েছে। ভবানিপুরকে আমি দূরে ঠেলে দিচ্ছি না। ওটাও আমার ভালবাসার জায়গা।’
সঙ্গে সঙ্গেই সুব্রত বক্সি ঘোষণা করে দিলেন, দিদির যখন ইচ্ছে হয়েছে, তাঁকেই নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। ঘরের মেয়ের সুরেই আবদারের ভঙ্গিতে নেত্রী বলেন, ‘আমি হয়তো নির্বাচনের সময় অত সময় দিতে পারব না। কারণ, আমাকে তো ২৯৪টা আসন থেকে লড়তে হবে। সেই জন্য আপনারা কিন্তু কাজটা করে দেবেন। তার পরে যা কাজ, আমি সব করে দেব। ঠিক আছে?’ পরে অবশ্য তিনি জানান, একুশের ভোটে নন্দীগ্রাম, ভবানিপুর– দুই কেন্দ্র থেকেই লড়বেন তিনি।