দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক :
পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশেরও পাগড়ি খুলে যায়। বিজেপির নবান্ন অভিযানে শিখ যুবকের পাগড়ি ‘খোলা’ নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে এবার মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন ডিজি ভূপিন্দর সিংহ। তিনি বলেন, “আমি সত্যিই ভাবতে পারছি না, এটা কোনও বিতর্কের বিষয় হতে পারে! প্রায় ৩৫ বছর পশ্চিমবঙ্গেই চাকরি করেছি। কিন্তু কোনও দিন পুলিশের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ উঠতে দেখিনি।”
তিনি আরও বলেন, “শুনলাম, অনেকে ট্যুইট করে গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, শিখদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। আমি নিজে শিখ। এক জন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকও বটে। এই দুই পরিচয় মাথায় রেখেই বলছি, এখানে কোনও ভাবে কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়নি। আমার নিজের জীবনে এ রকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি হঠাৎ হিংসাত্মক হয়ে উঠেছে। আমরা লাঠি চালিয়েছি। এ রকম অনেকের পাগড়িই তখন খুলে গিয়েছে।”
তিনি বলেন, “জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তো আমার নিজের পাগড়িও খুলে গিয়েছে বেশ কয়েক বার। এটা তো খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা। পুলিশ তাড়া করছে। ধস্তাধস্তি হচ্ছে। লাঠি-টিয়ার গ্যাস চলছে। তার মধ্যে পুলিশ কাউকে ধরতে গেল। সে বাধা দিল। তার মধ্যে পাগড়ি খুলে গেল। আমরা যে পাগড়ি পরি তা খুব আঁটোসাটো হয় না। হালকা টানেও খুলে যেতে পারে।”
তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ট্যুইট করা একটা ভিডিয়োও দেখলাম। নিজের চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ওই যুবক নিশ্চয়ই পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেননি। বাধা দিয়েছিলেন পুলিশকর্মীদের। সেখান থেকে একটা ধস্তাধস্তি হয়েছে। ওই যুবককে যে পুলিশকর্মী নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি ইচ্ছে করে তাঁর পাগড়ি খুলে দিয়েছেন— ভিডিয়ো দেখে আমার কোথাও তা মনে হয়নি। বরং স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ধস্তাধস্তিতে আগেই পাগড়ি ঢিলে হয়ে গিয়েছিল। সেটা আপনা থেকেই খুলে গিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “খোদ পঞ্জাবের কথা বলছি। গোটা পঞ্জাব জুড়ে তো গত কয়েক দিন ধরে কৃষকদের একের পর এক বিক্ষোভ চলছে। তাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। পুলিশ জলকামান ব্যবহার করছে। লাঠি চালাচ্ছে। পুলিশের তাড়ায় বিক্ষোভকারীদের পাগড়ি খুলে যাচ্ছে। কখনও তাড়ার চোটে পাগড়ি ফেলেই পালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। এ তো রুটিন ঘটনা। ” উল্লেখ্য, ভূপিন্দর সিংহ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল। ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১০ সালের অগস্ট পর্যন্ত তিনি রাজ্যের সর্বোচ্চ পুলিশ কর্তার দায়িত্ব সামলেছেন। চাকরি জীবনে রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। বর্তমানে তিনি চণ্ডীগড়ে থাকেন।