Thursday, April 18, 2024
Latest Newsফিচার নিউজরাজ্য

মমতার বিরুদ্ধে ভোটে লড়তে নারাজ বহু নেতা, ভবানীপুর ফের বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল?

দৈনিক সমাচার, ডিজিটাল ডেস্ক: উপ নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিরুদ্ধে লড়ে হারের বোঝা মাথায় নিতে চাইছেন না। রাজ্য বিজেপির প্রথম সারির কয়েকজন নেতাকে ভবানীপুরে লড়ার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তবে তারা কেউই এই ভরা তৃণমূলের হাওয়ায় মমতার বিরুদ্ধে ভোটে লড়তে চাইছেন না। তাই শেষমেশ ফের অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষকেই ভবানীপুর ফের বিজেপি প্রার্থী করা হতে পারে বলে বিজেপির অন্দরে গুঞ্জন। যদিও ভবানীপুর থেকে মমতাই যে তৃণমূলের প্রার্থী হবেন, এমন ঘোষণা আনুষ্ঠানিক ভাবে হয়নি।

বিজেপি অবশ্য মমতাকেই ভবানীপুরের সম্ভাব্য তৃণমূল প্রার্থী ধরে নিয়েই ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে। এ বারের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে লড়েছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। ভোটের মুখে তিনি দলবদল করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। তাঁকে ভবানীপুরের মতো ‘হাই প্রোফাইল’ কেন্দ্রে প্রার্থী করা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিজেপির অন্দরেই। তবে দলের তখন কেন্দ্রীয় শাসন তুঙ্গে। তাই রাজ্য বিজেপির একাংশের আপত্তি ধোপে টেকেনি। রুদ্রনীল ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে ওই কেন্দ্রে হেরেছিলেন তৃণমূলের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে।

ঘটনা হল, ভবানীপুরে লড়ার ইচ্ছে ছিল বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের। সূত্রের খবর, টিকিট পাওয়ার জন্য দিল্লিতে তিনি তদ্বিরও করেন। কিন্তু দলবদলু রুদ্রনীলকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ বার রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশ চাইছে, ভবানীপুর থেকে তথাগতকেই লড়ানো হোক। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে তথাগত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথমবার তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি, তাই এ বার মমতার বিরুদ্ধে লড়তে তিনি ভবানীপুর যাবেন না।

 

উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে লড়ার বার্তা পৌঁছেছে রাজ্য বিজেপির আরও কয়েকজন শীর্ষনেতার কাছে। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকের একটাই কথা, জেনেশুনে বাঘের খাঁচায় ঢোকার কোনও মানে হয় না। বঙ্গ-বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘আমাকে ঠারেঠোরে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই কেন্দ্রে দাঁড়ানোর জন্য। ভবানীপুরে আমরা বিপুল ভোটে হেরেছি। এ বার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তৃণমূলের জয়ের মার্জিন আরও বাড়বে। নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে জুয়া খেলতে পারব না।’

এ বারের বিধানসভা ভোটে অনেক দলবদলুকে বিজেপির দিল্লির নেতারা টিকিট দিয়েছিলেন। তাঁদের সিংহভাগই হেরেছেন। ফলে বিজেপির অন্দরে দলবদুলদের টিকিট দেওয়ার নীতি রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ভবানীপুরে প্রার্থী ঠিক করার ভার রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপরেই ছাড়তে চাইছেন তাঁরা। পরাজয় অনিবার্য বুঝে রাজ্য বিজেপি নেতারাও এই দায়িত্ব সবটা কাঁধে রাখতে চাইছেন না।

দলের এক আদি নেতার অভিমত, ‘সব কিছুই তো দিল্লি ঠিক করেছে এতদিন। এটাও আর বাদ যায় কেন! আমি তো দিলীপ ঘোষকে বলেছি, দিল্লিকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। আমাদের এ সবে ঢোকার দরকার নেই।’ কংগ্রেস ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বিজেপি বুঝে উঠতে পারছে না, শেষ পর্যন্ত বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে কে এগিয়ে আসবেন। সে ক্ষেত্রে রুদ্রনীলেরই ফের ভবানীপুর থেকে বিজেপির হয়ে দাঁড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা। তিনি যে ভাবে ভবানীপুর অঞ্চলে মাটি কামড়ে পড়ে আছেন, তা থেকে স্পষ্ট, মমতার বিরুদ্ধে লড়তে আপত্তিও নেই তাঁর।

রুদ্রনীল বলেন, ‘আমাকে এখনও এ বিষয়ে দল কিছু জানায়নি। দলের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। পার্টি যা নির্দেশ দেবে সেটাই মেনে চলার চেষ্টা করব।’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু অবশ্য জানিয়েছেন, ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে এখনও দলে কোনও আলোচনা হয়নি। এ নিয়ে তৃণমূল নেতা তাপস রায়ের কটাক্ষ, ‘শুধু ভবানীপুর কেন, রাজ্যের অন্য কোনও কেন্দ্রেও বিজেপি ভবিষ্যতে প্রার্থী খুঁজে পাবে কি না, সন্দেহ আছে।’

 

 

Leave a Reply

error: Content is protected !!