Thursday, November 21, 2024
গল্পফিচার নিউজশিল্প-সাহিত্য

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৭)

মুহসীন মোসাদ্দেক

 

(পূর্ব প্রকাশের পর)

জুয়েল ভাইয়ার জব্বর ভয়…

ক্লাস শেষ হতেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো ওরা। লাবুর মনে হতে থাকে গত কয়েক ঘণ্টা যেন কয়েক জনমের সমান! সেই কোন কাল থেকে ক্লাস করছে! রাতের ট্রেনে সাত ঘণ্টার মতো জার্নি করে এসে আবার প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা স্কুলের গণি্ডতে আবদ্ধ। লাবু লম্বা করে শ্বাস নেয়, যেন সাজা ভোগ করে বের হলো কোনো কয়েদি!

এত ঘণ্টার ক্লান্তিও লাবুকে কাবু করে না। বাসায় গিয়ে কোনো রকমে কাপড় পাল্টে আবার বেরিয়ে পড়ে রুবেলকে নিয়ে। বাকিরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছে। স্কুল ড্রেস বদলে এসে যাবে ওরাও। লাবু আর রুবেল আমবাগানে গিয়ে একটা আমগাছে চড়ে পা ঝুলিয়ে বসে। বাকিদের এখানেই আসার কথা। এই গাছটাই লাবুদের ঘাঁটি।

সব গাছেই আম ঝুলে আছে। এই সময় আমগাছে চড়া নিষেধ। কিন্তু, লাবুর জন্য আপাতত তা শিথিল করা হয়েছে। তবে, আম পাড়া যাবে না। পা ঝুলিয়ে ডাল ঝাঁকিয়ে একটু দোল খায় লাবু। আমগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে। হাতের কাছের দু-চারটা আম ছুঁয়ে দেখে। খেতেও অবশ্য ইচ্ছে করে, গাছে চড়ে পা ঝুলিয়ে বসে হাতের কাছ থেকে একটা আম টুপ করে পেড়ে নিয়ে খাওয়ার মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার আছে। একটা পেড়ে নিয়ে খেয়ে ফেললে যদিও কেউ টের পাবে না, তবুও নিষেধ অমান্য করতে চায় না লাবু। লাগলে বড় আব্বুকে বলে অনুমতি নিয়ে পেড়ে খাবে।

এর মধ্যে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে হাজির হয় সুরুজ। তার হাফ প্যান্টের দুই পাশের পকেট ফুলে আছে। গাছে চড়ে পা ঝুলিয়ে বসে সে পকেট থেকে বেশ কয়েকটা পেয়ারা বের করে লাবু-রুবেলের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘নে, খা।’

রুবেল বলে, ‘কার গাছের?’

‘হইবো কোনো গাছের! আকাশ থেইকা তো আর পড়ে নাই!’ সুরুজ উড়িয়ে দেয়।
লাবু পেয়ারাতে একটা কামড় দিয়ে চিবুতে চিবুতে বলে, ‘খেতে তো খুব ভালো!’
হঠাৎ ছুটতে ছুটতে হাজির হয় শেফালি। শেফালিকে দেখে সুরুজ গাছের আরো উপরের দিকের ডালে চড়ে বসে। শেফালিও গাছে চড়ে বসে। কিন্তু উপরের দিকে আর যেতে পারে না। সুরুজের দিকে তাকিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে হুংকার ছোড়ে, ‘বদমাইশ! উপরে উঠলি ক্যান? সাহস থাকে তো নাইমা আয়।’

সুরুজ ভেঙচি কাটে। শেফালির হুংকারকে কেয়ার করে না।
লাবু বলে, ‘সুরুজ কী করেছে শেফালি?’
‘কত্ত বড় সাহস! আমগো গাছ থেইকা পেয়ারা পাইড়া আনে!’

‘ও, এগুলো তোমাদের গাছের পেয়ারা? খুব ভালো কিন্তু তোমাদের গাছের পেয়ারা। মজা লাগছে খেতে।’
‘মজা লাগতিছে খাও, তাই বইলা চুরি কইরা খাইতে হইবো?’
‘এইগুলা কি চুরি করা?’
‘তা নাইলে আবার কি!’
‘ও, সুরুজ চুরি কইরা আনছে! ওরে তো থাপড়ানো দরকার!’
লাবুর ভাষা শুনে ভ্রু কুঁচকায় শেফালি। রুবেল-সুরুজ অবশ্য ভ্রু কুঁচকায় না।
শেফালি একটু আহ্লাদ করে বলে, ‘তুমি এই রকম কইরা কথা বলবা না। যে রকম কইরা বলো সেই রকমই বলবা। ঠিক আছে?’

‘আচ্ছা, তাই বলবো।’ লাবুর কথায়ও আহ্লাদ ঝরে পড়ে।

লাবু হাতে থাকা আরেকটা পেয়ারা শেফালির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘নাও, তুমিও খাও।’

শেফালি হাত বাড়িয়ে নেয়।
লাবু সুরুজকে উদ্দেশ করে বলে, ‘চুরি করা তোর ঠিক হয় নি সুরুজ। চেয়ে নিতি।’

উপর থেকে সুরুজ বলে, ‘চাইলে মনে হয় খুব দিতো!’

‘অতই সোজা! তুই কোথাকার লাটসাহেবরে, যাইয়া চাইবি আর দিয়া দিবো!’ শেফালি মুখ ঝামটা দিয়ে বলে।
সুরুজ বলে, ‘দেখলি তো, দেখলি? এখন বল চুরি না কইরা কী করবো!’

‘তবুও চুরি করা ঠিক হয় নি সুরুজ।’ লাবু খুব ভাব নেয়। অথচ অন্যের গাছের ফল চুরি করে খাওয়ার মিশনে লাবুই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়!

রুবেল মিনমিন করে বলে, ‘নিজে মনে হয় খুব সাধু!’

লাবু এড়িয়ে যায়, ‘মিন্টু-টিপু-ইলিয়াসের খবর কী? ওরা আসে না কেন?’
শেফালি আবদারের ভঙ্গিতে লাবুকে বলে, ‘আমারে তোমাগো সঙ্গে নিবা?’
লাবু উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিতে বলে, ‘অবশ্যই নিবো।’

সুরুজ প্রতিবাদ করে বলে, ‘না, মাইয়াগো দলে নিয়া যাইবো না।’

রুবেল যোগ করে, ‘ওগো প্যাট খুব পাতলা হয়। আমগো গোপন কাজ-কারবার সব ফাঁস কইরা দিবো।’

শেফালি তেতে ওঠে, ‘তোরা কেমন করে জানোস আমার প্যাট পাতলা না মোটা! কখনো যাচাই কইরা দেখছোস!’

লাবু শেফালির পক্ষ নিয়ে বলে, ‘সবাই একরকম হয় না। তেমন সব মেয়েরও পেট পাতলা না। শেফালিকে আমরা দলে নিয়ে দেখতে পারি। সে যদি কখনো কিছু ফাঁস করে দেয় তখন না হয় দেখা যাবে।’

রুবেল-সুরুজ কেমন করে যেন তাকায় লাবুর দিকে। শেফালির প্রতি হঠাৎ লাবুর এমন দরদ ভালো লাগে না ওদের। লাবু বুঝতে পারে ব্যাপারটা, কিন্তু মাথা ঘামায় না।

শেফালি জোরালোভাবে বলে, ‘আমি মোটেও ওই রকম না। এত সহজে আমি কিছু ফাঁস করি না। প্যাটে বোমা মাইরা দিলেও কথা বাইর হইবো না।’

‘ঠিক আছে। আজ থেকে তাহলে তুমি আমাদের দলে। কিন্তু কথাটা মাথায় রেখো—আমাদের গোপন কিছু কারো কাছে কখনো ফাঁস করা যাবে না।’

‘ঠিকাছে। সেই রকম কিছু কখনো হইবো না, নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।’

রুবেল আর সুরুজকে উদ্দেশ করে লাবু বললো, ‘তোদের কি আর আপত্তি আছে?’
‘আপত্তির আর কী আছে, ওই কথা রাখলেই হইলো।’ রুবেল একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে।

সুরুজ এবার নিচের দিকে নেমে আসে, ‘তাইলে তগো গাছের পেয়ারা পারলে তাইড়া আসতে পারবি না।’

শেফালি মুখ ঝামটা দেয়, ‘তুই কোথাকার লাটসাহেবরে! তোরে পেয়ারা খাওয়ার ফ্রি লাইসেন্স দেয়া লাগবো!’

লাবু মধ্যস্থতা করে, ‘আহা, ঝগড়া করছো কেন? পেয়ারা খেলে খাবে। ও আর কয়টা পেয়ারা খাবে বলো? গাছ তো আর সাবাড় করে দিতে পারবে না! এটা নিয়ে আর ঝগড়া করে লাভ নেই।’

শেফালি মেনে নেয়। আর কথা বাড়ায় না। সুরুজকে মুখ ভেঙচে দেয়। সুরুজও পালটা ভেঙচি দেয়।

মিন্টু আর ইলিয়াসকে আসতে দেখা যায়। গাছের নিচে আসতেই সুরুজ টিটকারি দিয়ে বলে, ‘তোদের মনে হয় সাত সমুদ্দুর পাড়ি দিয়া আইতে হইলো!’

‘আর কইস না!’ গাছে চড়তে চড়তে মিন্টু বলে, ‘টিপুরে নিয়া আমরা একসাথে আসতেছিলাম। ওর লাইগাই দেরি হইয়া গেলো! সকাল থেইকাই তো ফড়িংয়ের পিছে লাগছে। রাস্তায় আইতে আইতে ফড়িং দেখলেই দৌড় দেয়। কয়—ফড়িং একটা ধরাই লাগবো। ওর সাথে সাথে আমাদেরকেও ফড়িংয়ের পিছে পিছে দৌড়াইতে হইলো। কিন্তু ফড়িং আর কেউ ধরবার পারি না! লাস্টে ওরে রাইখাই চইলা আসলাম! ওই দৌড়াক ফড়িংয়ের পিছে পিছে। আমরা নাই!’

‘ফড়িং দিয়া ওই কী করবো?’ শেফালি আগ্রহ নিয়ে জানতে চায়।
‘হেলিকপ্টার বানাইবো!’ ইলিয়াস ফট করে বলে।

‘হেলিকপ্টার!’ শুধু শেফালি না, রুবেল-লাবু-সুরুজও বিস্মিত হয়ে বলে।
শেফালি আরো যোগ করে, ‘ফড়িং দিয়া ক্যামনে হেলিকপ্টার বানাইবো!
‘আমরা তার কী জানি!’ মিন্টু বলে।
টিপু আলাভোলা টাইপের ছেলে, ফড়িংয়ের পিছে সে ছুটতেই পারে। বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু ফড়িং দিয়ে হেলিকপ্টার বানানোর মতো উদ্ভট বিষয় তার মাথায় থাকতে পারে এটা বিস্মিত হওয়ার মতোই ব্যাপার। সে বিজ্ঞানী টাইপের ছেলে। একটা কিছু যন্ত্র সে বানাতেই পারে। তাই বলে ফড়িং দিয়ে সে হেলিকপ্টার বানিয়ে ফেলবে—এটা কারো বিশ্বাস হয় না।

রুবেল বিরক্ত হয়ে বলে, ‘যত্তসব পাগলামি!’

তবে, সবারই খুব আগ্রহ হয় একটা ফড়িং দিয়ে কীভাবে হেলিকপ্টার বানানো হবে—তা জানার জন্য। টিপুর জন্য তাই তাদের অপেক্ষা চরমে ঠেকে।

লাবু বলে, ‘ও কি ফড়িং ধরতে না পারলে আজকে আর আসবে না?’

‘মনে হয় না—’ মিন্টুর কথা শেষ হয় না। তার আগেই এ আশঙ্কার অবসান ঘটিয়ে টিপুকে আসতে দেখা যায়। এবং বোঝা যায় তার হাতে কিছু একটা আছে যেটা সে খুব যত্ন করে ধরে রেখেছে, মনে হয় সে আদরও করছে। সেটা ফড়িং ছাড়া আর কিছু হতেই পারে না!

টিপু গাছে চড়ে বসে। হাতের ফড়িংটাকে আদর করতে থাকে, বলে, ‘বহুত দৌড়ানি দিছে ব্যাটা!’

লাবু জিজ্ঞেস করে, ‘তুই নাকি ফড়িং দিয়ে হেলিকপ্টার বানাবি?’

‘হুম।’

‘ক্যামনে! এইটা কী সম্ভব!’ শেফালি বলে।
‘ক্যান সম্ভব না? প্রথমে কাগজ দিয়া একটা হেলিকপ্টার বানাবো। তারপর ভেতরে একটা ফড়িং ঢুকায় দিবো। ফড়িং উড়বো, হেলিকপ্টারও উড়বো!’
‘কিন্তু কাগজের একটা হেলিকপ্টারের চেয়ে ফড়িংয়ের ওজন অনেক কম, ফড়িং খুব হালকা একটা প্রাণী। ফড়িং কীভাবে কাগজের হেলিকপ্টারসহ উড়বে!’ লাবু বিজ্ঞের মতো বলে।

টিপু পুরোটা ভেঙে বলে, ‘শোন পুরো নকশাটা কই—খুব পাতলা কাগজ দিয়া হেলিকপ্টার বানাবো, আর তার সাইজ হইবো ফড়িংয়ের সমান। একটু বড় সাইজের ফড়িং লাগবো—’ হাতের ফড়িংটা দেখিয়ে বলে, ‘এইরকম ছোট সাইজের ফড়িং দিয়া হইবো না। হেলিকপ্টারের সামনে দিয়া ফড়িংয়ের মাথা বাহির করা থাকবো আর দুইপাশ দিয়া বাহির করা থাকবো পাখা। ফড়িং উড়বো, সাথে কাগজের হেলিকপ্টারও উড়বো। তয় পেছনে লম্বা সুতা বাঁইন্ধা হাতে ধইরা রাখবো। না হইলে তো একবার উইড়া গেলে আর ধরবার পারবো না। হাতে সুতা ধইরা থাকবো আর ঘুড্ডির মতোন হেলিকপ্টার উড়বো। হেব্বি হইবো না?’

লাবু মুখটা একটু বাঁকিয়ে বলে, ‘মনে হয় হবে না!’

টিপু উড়িয়ে দেয়ার মতো ভঙ্গি করে বলে, ‘তোরে কইছে হইবো না! বানাইলে দেখিস।’

‘আচ্ছা, তুই আগে বানা, তারপর বলিস।’
হেলিকপ্টারের বিষয়টা এখানেই থেমে যায়।

‘মিন্টু, ইলিয়াস আর টিপু—তোদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, শেফালি এখন থেকে আমাদের দলের একজন। তাকে আমাদের দলে নেয়া হয়েছে। তোদের কোনো মন্তব্য আছে?’ লাবু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
টিপু বলে, ‘আমি আগেই বুঝতে পারছিলাম! তুই কইয়া না দিলেও বুঝতে কষ্ট হইতো না।’

‘কীভাবে বুঝতে পেরেছিস?’
‘যে মাইয়া আমাগো ধারে-কাছেই আসে না, কথা-বার্তা কয় না, সে মাইয়া একেবারে গাছের ডালে চইড়া বসছে—বুঝতে কী আর বাকি থাকে যে সে আমাগো দলে আইসা ভিড়ছে!’ টিপু এমন ভাব করে যে সে বিরাট কিছু একটা উদ্ঘাটন করে ফেলেছে।

মিন্টু বলে, ‘ভালোই হইছে। একজন নেত্রী দরকার আছিল।’
সুরুজ মুখ ভেঙচে বলে, ‘ওরে আমার নেত্রীরে!’

শেফালি সুরুজের সাথে আর লাগে না। পাল্টা মুখ ভেঙচে দেয় শুধু।
ইলিয়াস কোনো কথা বলে না। ও তো এরকমই। বিশেষ একটা কথা বলে না। চুপচাপ শোনে আর মুচকি মুচকি হাসে। সবাই মিলে গল্প-গুজবে মেতে উঠে হই-হট্টগোল লাগিয়ে দিলেও দেখা যায় ইলিয়াস বিশেষ কিছু বলে নি। বাইরের কেউ হুট করে লাবুদের ভেতর এসে কিছু সময় কাটালে ইলিয়াসকে নির্ঘাত বোবা ভেবে বসতে পারে! হুট করে যে দুই-একবার ইলিয়াস কথা বলে ওঠে তাতে লাবুদেরই মাঝেমধ্যে বিস্ময় জাগে—আরে! ইলিয়াস কথা বলতে পারে! আজ সারাদিনের হিসাব করলেও দেখা যাবে হয়তো সে দুইটা কথা বলেছে! এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘সবাই কথা কইলে শুনবো কে! একজন তো শোনার মানুষ থাকা লাগে, নাকি!’

‘যাইহোক, বেলা পইড়া যাইতেছে, আমাগো আসল কাজ তো হইলো না—’
রুবেলের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে লাবু বললো, ‘হুম, জুয়েল ভাইকে সাইজ করার তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’
শেফালি কৌতূহলী হয়ে বলে, ‘জুয়েল ভাই আবার কী করলো!’

লাবু ব্যাখ্যা করে, ‘আসলে আমি যে কয়দিন এখানে থাকি সে কয়দিন আমাদের কাউকে স্কুলে যাওয়া লাগে না। আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো মজা করে, ঘুরে-ফিরে বেড়িয়ে কয়টা দিন কাটাতে পারি। কিন্তু এবার তা হয় নি। এবার আমাদের স্কুলে যেতে হচ্ছে এবং প্রতিদিনই যেতে হবে। আর এইটা জুয়েল ভাইয়ের ফন্দি। জুয়েল ভাই-ই এই ফন্দিটা বড় আব্বুকে দিয়েছে এবং বড় আব্বু দিয়েছে আমার আম্মুকে। যার কারণে বেড়াতে এসেও ওদের সাথে আমাকে এখন স্কুলে যেতে হচ্ছে। এজন্য আমরা জুয়েল ভাইকে একটু সাইজ করবো।’
‘ও।’ শেফালি সব বুঝে ফেলেছে এমন ভাব করে।

রুবেলকে উদ্দেশ করে লাবু বলে, ‘আচ্ছা, জুয়েল ভাই কখন ফিরবে?’
‘মোটামুটি সন্ধ্যার পরই ফিরে।’
মিন্টু বলে, ‘আজব একটা লোক! সেই সকালে বাহির হয় ফিরে সন্ধ্যায়!’
শেফালির কৌতূহল, ‘কী করে সারাদিন?’
রুবেল বলে, ‘সকালে টিউশানি কইরা কলেজে যায়। কলেজ শেষ কইরা আবার টিউশানি। তারপর বাসায় ফিরে। এজন্যই সন্ধ্যা হইয়া যায়।’
‘ও।’

লাবু বলে, ‘এখন বল, কী করা যায় জুয়েল ভাইকে?’

(চলবে)

পূর্ববর্তী পর্বসমূহ:

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১)

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০২)

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৩)

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৪)

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৫)

ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৬)

লেখক পরিচিতি
মুহসীন মোসাদ্দেক
জন্ম ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮; রাজশাহী, বাংলাদেশ। ২০১০ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ঘন অন্ধকারের খোঁজে’ এবং ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ঘি দেয়া গরম ভাত আর চিতল মাছের পেটি’। মাঝে ২০১৩ সালে কিশোর গল্পগ্রন্থ ‘মগডাল বাহাদুর’ প্রকাশিত হয়। প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর এমবিএ করেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষায়। বর্তমানে স্বনামধন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করছেন। বই প্রকাশে দীর্ঘ বিরতি চললেও লিখে যাচ্ছেন নিয়মিত। শিশু-কিশোরদের জন্য লিখতে ভালোবাসেন, বিশেষ করে দুরন্তপনার গল্পগুলো। লেখকের কৈশোর জীবন তুমুল দুরন্তপনায় কেটেছে এমনটা নয়, তবু বেশ রঙিন এক কৈশোর কাটিয়েছেন মফস্বল শহরে। রঙিন সে জীবনে ফিরে যাবার সুযোগ না থাকায় খুব আফসোস হয়। এ আফসোস ঘোচাতেই লেখার মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে যান কৈশোরে আর দুরন্তপনায় মেতে ওঠেন ইচ্ছেমতো। প্রত্যাশা কেবল এতটুকুই, কিছু উপযুক্ত পাঠক সঙ্গী হোক তার লেখার এ দুরন্ত জীবনে।

1 Comment

Leave a Reply

error: Content is protected !!