মুহসীন মোসাদ্দেক
(পূর্ব প্রকাশের পর)
লাবুদের নৌকা নিজের মতো করে চলতে থাকলো। আর লাবুরা বসে থাকলো অলস ভঙ্গিতে। তাদের জামা-প্যান্ট শুকিয়ে গেছে। এভাবে আরো বেশ কিছুটা সময় কেটে গেলো। সূর্যটা যখন পশ্চিম দিকে অনেকটাই হেলে পড়েছে তখন তারা বাড়ির দিকে রওনা হলো। শুধু লাবুর হাতেই ঘড়ি আছে। স্কুল ছুটি হয় বিকেল চারটায়, এখন বাজে সাড়ে তিনটা। সুতরাং এখনই রওনা হওয়া উচিত। রুবেল আর সুরুজ আবার হাল ধরে। মাঝ নদী দিয়ে নৌকা চলতে থাকে।
তরমুজ দুইটার কথা কারো মনে ছিল না। ইলিয়াস মনে করিয়ে দেয়, ‘আইচ্ছা, তরমুজ দুইটা তো খাইলাম না!’
‘তাইতো!’
মিন্টু লাফিয়ে উঠে নৌকার পাটাতনের নিচে পানিতে চুবিয়ে রাখা তরমুজ দুইটা বের করে। তরমুজ দুইটা তো তারই সংগ্রহ।
টিপুর কাছ থেকে চাকু নিয়ে কাটা হলো তরমুজ। চাকুটায় একটু জং ধরা। তাও আবার মাঝারি সাইজের চাকু। এই চাকু দিয়ে তরমুজ কাটতে বেশ কষ্টই হলো। এবং বিরক্তিটা টিপুর ওপরই ঝাড়লো মিন্টু। টিপু আর কী করবে! টিপু তো আর ডাকাত না যে ইয়া বড় আর ধারালো চাকু নিয়ে ঘুরে বেড়াবে! বিজ্ঞানী টাইপের মানুষ, টুকটাক কাটাকুটির কাজ চালানোর মতো চাকুই তার কাছে মানায়, এর বেশি প্রত্যাশা করা মানায় না।
দুটো তরমুজের একটার ভেতরটা বেশ লাল এবং খেতে মিষ্টি লাগলো। আরেকটা এখনো সেভাবে খাওয়ার উপযুক্ত হয় নি। তাও ভালো যে দুটো একসাথে কেটে তারপর ভাগ করা হয়েছে। আগে খারাপটা খেয়ে পরে ভালোটা খাওয়া হয়েছে।
ঝিনুকগুলো একটা পলিথিনে ভরে নেয়া হলো। আমবাগানে গিয়ে সেগুলো ফাটিয়ে মুক্তা অনুসন্ধান করা হবে। শামুকগুলোর কোনো কাজ নেই। ওগুলো আবার নদীতে ফেলে দেয়া হলো।
ঘাটে নৌকা ভিড়লো। এই ঘাটে আর কোনো নৌকা নেই। আসার পথেও কোনো ঘাটে আর কোনো নৌকা দেখা যায় নি। বিদেশির সে নৌকার গন্তব্য তবে আশেপাশে কোথাও নয়, আরো দূরের কোথাও।
নৌকা ঘাটে বেঁধে রেখে ভালো করে মুছে পরিষ্কার করে লাবুরা বাড়ির পথে রওনা হলো। পথে যেতে যেতে দেখা গেলো উল্টো দিক থেকে স্কুলের ছেলেমেয়েরা আসছে। লাবুদের দিকে তারা কেমন করে যেন তাকায়। লাবুরা মাথা ঘামায় না।
আমবাগানে এসে ঝিনুকগুলো ফাটানো হলো। ঝিনুক ফাটানো সহজ কথা না। খুব শক্ত খোলক। একটা ইটের ওপর ঝিনুক রেখে আরেকটা ইট দিয়ে পিটিয়ে একের পর এক ঝিনুক ফাটানো হলো। প্রথম প্রথম খুব উত্তেজনা কাজ করছিল, এই বুঝি একটা মুক্তা পাওয়া গেলো! কিন্তু একের পর এক ঝিনুক ফাটিয়ে এপার ওপার খুঁজেও কোনো মুক্তা পাওয়া গেলো না! শেষমেশ মুক্তা বিষয়ক উত্তেজনা একেবারে ম্লান হয়ে গেলো। ফাটানো ঝিনুকগুলো কুড়িয়ে পুকুরে ফেলে দেয়া হলো। মাছেদের যদি তাতে কিছু খাদ্যের যোগান হয়!
যে যার বাড়ি ফিরে গেলো।
লাবু-রুবেল বাসায় ঢুকতেই আম্মু বললো, ‘কিরে, তোদের চেহারার এ কী দশা!’
চেহারার কী দশা লাবুদের জানা নেই। সারাদিন নদী-চরে টানা রোদে কাটিয়ে আসার পর চেহারার কী দশা হতে পারে সে বিষয়েও তাদের ধারণা নেই। লাবুরা অবশ্য বিচলিতও হলো না। লাবু খুব স্বাভাবিকভাবেই জবাব দেয়, ‘বলেছিলাম না, টিফিনে ক্রিকেট খেলা ছিল! টানা রোদে দুপুর বেলায় ক্রিকেট খেলার কারণে এমন হতে পারে।’
‘দুপুরে খেয়েছিস তো?’
‘হ্যাঁ, খেয়েছি।’
‘কীভাবে খেয়েছিস? কী খেয়েছিস? যাওয়ার সময় তো টাকা বা কোনো খাবার নিয়ে যাস নি?’
‘তুমিও তো মনে করে খাওয়ার জন্য কোনো টাকা দাও নি। দোকান থেকে বাকিতে খেতে হয়েছে। কলা, পাউরুটি আর কেক খেয়েছি সবাই মিলে। ৮৫ টাকা বাকি হয়েছে। টাকাটা দিও, দিয়ে আসতে হবে।’
‘আচ্ছা নিয়ে যাস। এখন ভলো করে হাত-মুখ ধুয়ে নে।’
বড় আম্মু বলে, ‘হুম, হাত-মুখ ধুয়ে আসো ভাত খেয়ে নাও।’
‘না বড় আম্মু, ভাত খাবো না। এখন ক্ষিদে নেই।’
‘এ আবার কী কথা! দুপুরে শুধু কলা-পাউরুটি খাইছো, আর বলতিছো এখন ক্ষিদে নেই!’
‘সত্যিই ক্ষিদে নেই বড় আম্মু।’
রুবেল ঢেঁকুর তোলার ভঙ্গি করে বলে, ‘কলা-পাউরুটিই তো এখনো হজম হয় নাই।’
বড় আম্মু আর সাধে না।
লাবু-রুবেল কাপড় বদলে হাত-মুখ ধুয়ে আবার বেরিয়ে পড়ে। বের হওয়ার সময় আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোকানে গিয়ে দিয়ে আসে। তারপর আমবাগানে গিয়ে গাছে চড়ে বসে।
টিপু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কথা বলে হাঁড়ি আর চাল নিয়ে গিয়েছিল। বাসায় ফিরে মায়ের কাছে তাকে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার বিষয়টা বর্ণনা করতে হলো। সে বানিয়ে একটা পরীক্ষার কথা বলে। মা শুনে বিশেষ কিছু বোঝে না, ভ্রু কুঁচকায়। কিন্তু কিছু বলে না।
শেফালি কড়াই-ছেচকি-আঁচারের বোয়াম—যা যা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সব জায়গা মতো রেখে দেয়। কিন্তু আঁচারের বোয়ামে মায়ের দৃষ্টি পড়তেই চেঁচামেচি শুরু করে। এক বোয়াম আঁচার রোদে দেয়া ছিল, সেটা হাফ বোয়াম হয়ে গেছে। শেফালি বলে, সে খেয়েছে। একবারেই হাফ বোয়াম আঁচার খেয়ে ফেলায় তাকে বকাঝকা করা হয়। সে গায়ে মাখে না। এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়।
সবাই আমবাগানে এসে হাজির হয়। তারপর গাছে চড়ে পা ঝুলিয়ে বসে।
সুরুজ বলে, ‘হেব্বি একটা দিন কাটাইলাম।’
‘হুম, আসলেই হেব্বি একটা দিন। এখন থেকে প্রতিবারই একটা দিন আমরা এইভাবে কাটাবো। কী বলিস তোরা?’
লাবুর কথায় হই হই করে সম্মতি দেয় সবাই।
‘সবার বাসায় সবকিছু ঠিকঠাক আছে? কোনো ঝামেলা হয় নি তো?’ লাবু জানতে চায়।
‘নাহ, ঝামেলার কী আছে। কোনো ঝামেলা হয় নাই।’ মিন্টু বলে।
টিপু বলে, ‘বিজ্ঞান ক্লাসে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কথা বইলা হাঁড়ি আর চাল নিয়া গেছিলাম। মায়ে জানতে চাইছিল কী বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করাইলো? আমারে বানায় বানায় একটা পরীক্ষার কথা বলতে হইলো।’
‘তাইলে তো তোর জন্য ভালোই হইলো। বানায় বানায় যে পরীক্ষার কথা বলছিস সেইটা এখন নিজে নিজে করবি। কে জানে বিরাট কিছু একটা আবিষ্কার হইয়া যাইবো কিনা!’
সুরুজের কৌতুকে সবাই হেসে ওঠে।
শেফালি বলে, ‘তয় আমারে খুব বকা খাইতে হইলো।’
‘কেন?’ লাবু কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে বলে।
‘সারাদিন আঁচারের বোয়াম খেয়াল করে নাই মা। আমি যেই বোয়ামটা রাখছি সেই খেয়াল করছে—পুরো এক বোয়াম আঁচার হাফ বোয়াম হইয়া গেছে! আমি তখন কী জবাব দিবো! কইলাম আমিই খাইছি। একদিনেই হাফ বোয়াম আঁচার খাইয়া ফেলছি বইলা আমারে সে কী বকা!’
সুরুজ সান্ত¦না দিয়ে বলে, ‘ওইটা ব্যাপার না। মজা করতে হইলে এইটুকু বকা হজম করাই লাগবো। বকা হজম করতে না পারলে মজা করা যাইবো না।’
সুরুজের কথায় সবাই সায় দেয়।
ইলিয়াস উদ্বিগ্ন হয়ে বলে, ‘আইচ্ছা, দোকানের বাকি শোধ করা হইছে?’
ইলিয়াস বিশেষ একটা কথা না বললেও মাঝে মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথাই বলে। কিংবা আলোচনার ভেতরে যে বিষয়টা চাপা পড়ে যায় সেইটা সে তুলে আনে।
লাবু আশ্বস্ত করে, ‘হ্যাঁ, দোকানে টাকা দিয়ে এসেছি।’
সুরুজ বলে, ‘যাক, বাঁচলাম। ধরা খাইলে ওইখানেই খাইতে পারতাম!’
সবাই একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে, স্বস্তির নিঃশ্বাস। ধরা খাওয়া থেকে বেঁচে যাওয়ার স্বস্তি!
হঠাৎ হারুন ভাই ছুটে আসে, ‘লাবু ভাই, তোমরা এইখানে?’
‘কী হয়েছে হারুন ভাই?’ লাবু উদ্বিগ্ন হয়ে বলে।
‘তোমাদের সবাইরে ছোট আম্মায় ডাকে।’
‘কেন?’
‘স্কুল থেইকা জামান স্যার আসছে।’
ধক করে ওঠে সবার বুকের ভেতর!
‘জামান স্যার! মানে জানেমান স্যার!’ লাবু আতঙ্কিত হয়ে বলে, ‘জানেমান স্যার কেন এসেছে?’
‘আমি অত কিছু জানি না। তোমাদের সবাইরে নিয়া যাইতে কইলো।’
কেউ ভাবতেও পারে নি এমন ঘটতে পারে। জানেমান স্যার বলেছিল একসময় এসে দেখা করবে লাবুর আম্মার সাথে। কিন্তু সব বাদ দিয়ে আজই তার আসা লাগলো! নাকি লাবুকে স্কুলে না দেখে খোঁজ-খবর নিতে এলো! আর এসেই বিপদে ফেললো!
ধরা পড়া আসামির মতো মাথা নুয়ে, চোখ-মুখে আতঙ্কের আভা ফুটিয়ে লাবুরা হাজির হলো বাড়িতে। উঠোনে একটা চেয়ারে বসে আছে জানেমান স্যার। লাবুর আম্মু একটু পাশে একটা মোড়ায় বসে আছে। আরেক পাশে চেয়ারে বসে আছে বড় আব্বু। বড় আম্মু স্যারের জন্য চা-নাস্তা বানাচ্ছে রান্নাঘরে।
লাবু আম্মুর দিকে একবার সরাসরি তাকায়। খুব রেগে আছে বলে মনে হলো না, আবার খুব স্বাভাবিকও মনে হলো না।
স্যারকে সালাম দিয়ে লাবুরা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। সবার সামনে লাবু। তার পাশে কেউ নেই। বাকি সবাই তার পিছে।
লাবুর আম্মু বলে, ‘আপনারা সবাই পাথরের মতো এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন কেন! কোনো সমস্যা?’
লাবু আম্মুর দিকে তাকায়, মোটেও হাসি হাসি ভাব নেই তার মুখে, রাগ রাগ ভাবও অবশ্য নেই!
বড় আব্বু বলে, ‘থাক, বকাঝকা কইরো না। বেড়াতে আসছে, একটু ঘুরে বেড়াক, মজা করুক—বাধা দেয়ার দরকার নাই।’
‘তাই বলে এইরকম চিটিং করবে!’
‘এইসব কোনো ব্যাপার না।’ জানেমান স্যার লাবুদের পক্ষে ঢাল হয়, ‘আমরাও কত এইরকম করেছি!’
আম্মু এবার বেশ জোর গলায় হুংকার ছুড়লো, ‘আমার তো মন চাইছে পিটিয়ে একেবারে সোজা করে দিই।’
মাথা একটু নিচু করে রাখা ছাড়া সবাই সোজা হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। তাদের আর বিশেষ কী সোজা করা হবে বোঝা গেলো না!
জানেমান স্যার বললো, ‘না, না, তা করতে যাবেন না। এই বয়সে একটু মজা করবে না তো কবে করবে! থাক, বাদ দিন।’
জানেমান স্যার লাবুদের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘তা, তোমরা স্কুল বাদ দিয়ে সারাদিন কী করলে?’
লাবু মাথা তুলে বললো, ‘নৌকা নিয়ে নদীতে আর চরে ঘুরে বেড়িয়েছি। সেই সাথে ছোটখাটো একটা পিকনিকও করে ফেলেছি। আমরা নিজেরাই রান্না করে খেয়েছি।’
‘রান্না করে খেয়েছিস!’ আম্মু ভ্রু কুঁচকায়।
‘হুম। খিচুড়ি রান্না করেছিলাম।’
‘কী দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলি! চাল-ডাল পেয়েছিস কোথায়?’
‘সবাই নিজ নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে গেছি।’
বড় আম্মু এসে বলে, ‘তাইতো বলি, চালের ড্রামের মুখ খোলা ছিল ক্যান!’
সবাই একটু হেসে ওঠে। রুবেল মাথা চুলকায়।
‘তাহলে যে টিফিনে কলা-পাউরুটি খেয়েছিস বলে ৮৫ টাকা নিলি!’ আম্মু আরো ভ্রু কুঁচকায়।
‘দোকান থেকে তেল আর ডিম কিনেছিলাম বাকিতে। ওগুলো বাড়ি থেকে নিতে পারি নি।’
আম্মু এবার একটু কৌতুক করে বলে, ‘তা, আপনারা যে খিচুড়ি রেঁধেছিলেন তা কি মুখে দেয়ার যোগ্য হয়েছিল?’
সুরুজ উৎসাহী হয়ে বলে, ‘হয়েছিল মানে! হেব্বি টেস্ট হইছিল!’
লাবুও যোগ করে, ‘সত্যি আম্মু, খুব টেস্ট হয়েছিল! তুমি একবার খেলে আবার খেতে চাইতে!’
‘বাহ, আপনারা তো বিরাট রাঁধুনী হয়ে গেছেন তাহলে!’ আম্মু আবারো কৌতুক করে বলে।
সুরুজ বলে, ‘আমরা সবাই হাত লাগাইছি, ঠিক আছে। কিন্তু রান্না তো আসলে করেছে শেফালি!’
‘শেফালি!’ আম্মু ভ্রু কুঁচকায়, ‘কই, শেফালি কই!’
পেছন থেকে টেনে আনা হয় শেফলিকে। শেফালি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে।
আম্মু শেফালিকে কাছে টেনে নিয়ে বলে, ‘তুমিই শেফালি! তুমি নাকি সারাক্ষণ পাগলির মতো খিলখিল করে হাসো! তোমার নাকি হাসির রোগ আছে!’
শেফালি ঝট করে মাথা তোলে, ‘এইসব কে বলছে খালাম্মা!’
‘লাবুই তো বলছিল সেদিন।’
শেফালি লাবুর দিকে তাকায়, লাবু কাচুমাচু মুখে তাকিয়ে থাকে! খুব রাগ রাগ ভাব করতে চেষ্টা করে শেফালি, কিন্তু মোটেও রাগ রাগ ভাব ফুটে ওঠে না, বরং হাসি হাসি ভাব ফুটে ওঠে। হাসি চেপে রাখতে পারে না, খিলখিল করে হাসতে শুরু করে শেফালি!
হাসি নাকি খুব সংক্রামক। সেটাই প্রমাণ হয় আবার। শেফালির হাসির সংক্রমণে হেসে ওঠে সবাই-ই।
এই হাসাহাসিই পরিবেশটা শীতল করে দিলো। লাবুদের শাস্তি পেতে হলো না।
রাতের ট্রেনে লাবুর আব্বুর আসার কথা ছিল। সন্ধ্যায় ফোন করে জানালো এবার আর আসা হচ্ছে না তার। আব্বু এলে আগামীকাল এবং পরশু—এই দুইদিন থেকেই চলে যেতে হতো লাবুকে। আব্বু যেহেতু আসছে না, অনুনয় এবং আবদার করে আরো দুইটা দিন বাড়িয়ে নিলো লাবু। আব্বু ‘না’ করলো না। লাবু তাই আরো চারটা দিন এখানে থাকার সুযোগ পাচ্ছে। আব্বু না আসাতে লাবুর তাই কোনো দুঃখ হলো না, বরং তার খুশির মাত্রা বেড়ে গেলো।
(চলবে)
(চলবে)
পূর্ববর্তী পর্বসমূহ:
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০২)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৩)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৪)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৫)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৬)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৭)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৮)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ০৯)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১০)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১১)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১২)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১৩)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১৪)
ধারাবাহিক কিশোর উপন্যাস: লাবুদের দস্যিপনা (পর্ব ১৫)
জন্ম ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮; রাজশাহী, বাংলাদেশ। ২০১০ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘ঘন অন্ধকারের খোঁজে’ এবং ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ঘি দেয়া গরম ভাত আর চিতল মাছের পেটি’। মাঝে ২০১৩ সালে কিশোর গল্পগ্রন্থ ‘মগডাল বাহাদুর’ প্রকাশিত হয়। প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর এমবিএ করেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষায়। বর্তমানে স্বনামধন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করছেন। বই প্রকাশে দীর্ঘ বিরতি চললেও লিখে যাচ্ছেন নিয়মিত। শিশু-কিশোরদের জন্য লিখতে ভালোবাসেন, বিশেষ করে দুরন্তপনার গল্পগুলো। লেখকের কৈশোর জীবন তুমুল দুরন্তপনায় কেটেছে এমনটা নয়, তবু বেশ রঙিন এক কৈশোর কাটিয়েছেন মফস্বল শহরে। রঙিন সে জীবনে ফিরে যাবার সুযোগ না থাকায় খুব আফসোস হয়। এ আফসোস ঘোচাতেই লেখার মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে যান কৈশোরে আর দুরন্তপনায় মেতে ওঠেন ইচ্ছেমতো। প্রত্যাশা কেবল এতটুকুই, কিছু উপযুক্ত পাঠক সঙ্গী হোক তার লেখার এ দুরন্ত জীবনে।
1 Comment